বাংলা সাহিত্যের এক জীবন্ত কিংবদন্তি - মলয় রায়চৌধুরী- আসছে “রাহুকেতু”

 



হরকরা প্রকাশন থেকে অমর একুশে বই মেলা ২০২৩ প্রকাশিত হচ্ছে জীবন্ত সাহিত্যকিংবদন্তি মলয় রায়চৌধুরী'র অপ্রকাশিত উপন্যাস "রাহুকেতু"। তাকে স্যালুট জানাই জীবনের প্রায় শেষ সময়ে এসেও তিনি সাহিত্য জীবন ও বিপ্লব থেকে একটুও সরে যাননি, থেমে যায়নি তার সৃষ্টির নৈপুণ্য এবং প্রেম। ঈশ্বর তাকে সুস্থ ও সুন্দর রাখুক শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ অব্দি।

সন্মানিত এই বিপ্লবি কবি ও সাহিত্যিক মলয় রায় চৌধুরী'র সৃষ্টি নিয়ে কাজ করতে পারার প্রয়াসে 'হরকরা প্রকাশন' আনন্দ এবং গর্ববোধ করছে। তাঁর সম্পর্কে জেনে শুনে পড়ে বা বিভিন্ন মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহে করে আমরা তাকে যতোটুকু আবিষ্কার করেছি তার সংক্ষিপ্ত কিছু বিবরণ নিচে দেয়া হলো। এছাড়া তাঁর লেখা, সাহিত্য ও ব্যক্তি জীবন সম্পর্কে মোটামোটি সাহিত্য জগতের সবাই কমবেশি জানেন বলে আশা করি।
★মলয় রায়চৌধুরী
(জন্ম: অক্টোবর ২৯, ১৯৩৯) বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, প্রাবন্ধিক, অনুবাদক, সাংবাদিক, গণবুদ্ধিজীবি এবং সর্বোপরি ১৯৬০-এর দশকের হাংরি আন্দোলন—হাংরিয়ালিজম—তথা বাংলা সাহিত্যে প্রতিষ্ঠানবিরোধিতার জনক[১] এবং এ কারণে ১৯৬০-এর দশক থেকেই ব্যাপক পাঠকগোষ্ঠীর দৃষ্টি আর্কষণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। আধুনিক বাংলা কবিতার ইতিহাসে তিনি বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব। গতানুগতিক চিন্তাধারা সচেতনভাবে বর্জনের মধ্য দিয়ে তিনি বাংলা সাহিত্যে উত্তর আধুনিকতাবাদ চর্চা এবং প্রতিষ্ঠানবিরোধী আন্দোলন শুরু করেন। ১৯৬৪ সালে "প্রচণ্ড বৈদ্যুতিক ছুতার" কবিতার জন্যে রাষ্ট্রবিরোধী মামলায় গ্রেফতার ও কারাবরণ করেন।
মলয় রায়ের রচনার অন্যতম বৈশিষ্ট্য সাহিত্যের সনাতন ধারা অনুশাসনের বিরুদ্ধাচারণ। এ বিষয়ে স্বপ্ন পত্রিকায় লিখিত প্রবন্ধে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান উল্লেখ করেছেন, 'সাহিত্যের সনাতন অনুশাসনগুলির বিরুদ্ধে মলয় রায়চৌধুরীর বিদ্রোহ তার রচনার অন্যতম বৈশিষ্ট্য'। তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা দুই শতের অধিক। তার ১০টি কাব্যগ্রন্থ, ১০টি উপন্যাস, দুটি ডিটেকটিভ উপন্যাস, একটি ইরটিক নভেলা, ১২টি সমালোচনা গ্রন্থ, চারটি জীবনী এবং বহু অনুবাদ গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েঝে। উল্লেখযোগ্য রচনার মধ্যে শয়তানের মুখ, জখম, ডুব জলে যেটুকু প্রশ্বাস,নামগন্ধ চিৎকার সমগ্র, কৌণপের লুচিমাংস, মাথা কেটে পাঠাচ্ছি যত্ন করে রেখো, বাউল-কবিতা সিরিজ ডোমনি, অ্যালেন গিন্সবার্গের হাউল ও ক্যাডিশ কাব্য-গ্রন্থের অনুবাদ প্রভৃতি অন্যতম। তিনি বিট মহিলা কবিদের রচনা অজস্র অনুবাদ করেছেন, পরাবাস্তব কবিদের অনুবাদ করেছেন এবং জাঁ জেনের সমস্ত কবিতা অনুবাদ করেছেন । লোকনাথ ভট্টাচার্যের পর তিনি দ্বিতীয় বাঙালি যিনি জাঁ আর্তুর র‌্যাঁবো'র নরকে এক ঋতু এবং ইল্যুমুনেশান্স অনুবাদ করেছেন । বুদ্ধদেব বসুর পর প্রথম বাঙালি যিনি বোদলেয়ারের সমগ্র কবিতা অনুবাদ করেছেন । বিদেশি কবি ওকতাভিও পাজ, আরনেস্তো কার্দেনাল, অ্যালেন গিন্সবার্গ, ডেইজি অ্যালডান প্রমুখ ভারতে এসে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন । পেঙ্গুইন র‌্যাণ্ডাম হাউস থেকে তাঁকে নিয়ে 'দি হাংরিয়ালিস্টস নামে একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে, যা লিখেছেন মৈত্রেয়ী ভট্টাচার্য চৌধুরী । তাঁর কবিতা নিয়ে পিএইচডি করেছেন হিডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ড্যানিয়েলা ক্যাপেলো, আসাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিষ্ণুচন্দ্র দে এবং উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উদয়শঙ্কর বর্মা ।
★প্রাথমিক জীবন
মলয় রায়চৌধুরী অক্টোবর ২৯, ১৯৩৯ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ রাজ (বর্তমানে ভারত) বিহার প্রদেশের রাজধানী পাটনা শহরে জন্মগ্রহণ করেছেন। তিনি সুতানুটি-গোবিন্দপুর-কলিকাতা খ্যাত সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবারের উত্তরপাড়া শাখার সন্তান। পিতা রজ্ঞিত রায়চৌধুরী (১৯০৯-১৯৯১) ছিলেন ভারতীয় চিত্রশিল্পী এবং মাতা অমিতা (১৯১৬-১৯৮২) ছিলেন পাণিহাটিস্থিত নীলামবাটির কিশোরীমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়-এর (রোনাল্ড রস-এর সহায়ক) জ্যেষ্ঠ কন্যা। কলকাতার সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিষদ কর্তৃক সংরক্ষিত সংগ্রহশালার (জাদুঘর) তথ্য অনুযায়ী মলয় রায়ের পিতামহ লক্ষ্মীনারায়ণ রায়চৌধুরী ছিলেন ভারতবর্ষের প্রথম ভ্রাম্যমাণ আলোকচিত্রশিল্পী। মলয় রায়ের ভাই সমীর রায়চৌধুরী বাংলা সাহিত্যের একজন বিতর্কিত কবি।
★শিক্ষা ও কর্মজীবন
২০০৯ সালে স্ত্রী শালিলার সাথে হল্যান্ডের ড্যান হ্যাগে মলয়।
২০০৯ সালে স্ত্রী শালিলার সাথে হল্যান্ডের ড্যান হ্যাগে মলয়।
পাটনার সেইন্ট জোসেফ কনভেন্টে প্রাথমিক এবং রামমোহন রায় সেমিনারিতে ম্যাট্রিকুলেশানের পর অর্থনীতিতে সাম্মানিক স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন মলয় রায়। গ্রামীণ উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ দলে প্রশিক্ষনের পর প্রথমে রিজার্ভ ব্যাংক ও তারপর এঅরডিসি এবং নাবার্ডে গ্রামীণ উন্নয়ন বিশেষজ্ঞের উচ্চপদে ভারতের বিভিন্ন শহরে ১৯৯৭ পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। যুগশঙ্খ পত্রিকায় প্রকাশিত প্রবন্ধে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের রিডার ডক্টর শঙ্কর ভট্টাচার্য বিশ্লেষণ করে জানিয়েছেন যে মলয় রায়চৌধুরী সমগ্র জীবন ভারতের চাষি, তাঁতি, জেলে ও হস্তশিল্পীদের মাঝে কাটিয়ে প্রভূত অভিজ্ঞতা লাভ করেন, এবং তা তার সাহিত্যকর্মে গভীর প্রভাব ফেলেছে।
★ হাংরি আন্দোলন
মূল নিবন্ধ: হাংরি আন্দোলন
১৯৬১ সালে দাদা সমীর রায়চৌধুরী, শক্তি চট্টোপাধ্যায় এবং হারাধন ধাড়ার (দেবী রায়) সঙ্গে হাংরি আন্দোলন আরম্ভ করে আবির্ভাবেই সাড়া ফেলে দেন। তার সাংগঠনিক দক্ষতায় প্রায় চল্লিশজন কবি, লেখক ও চিত্রশিল্পী এই আন্দোলনে যোগ দেন, যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন বিনয় মযুমদার, সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়, উৎপলকুমার বসু, সুবিমল বসাক, বাসুদেব দাশগুপ্ত, ফালগুনী রায়, অনিল করঞ্জাই, রবীন্দ্র গুহ প্রমুখ। এই আন্দোলনের মুখপত্র হিসাবে এক পাতার বুলেটিন প্রকাশ করা হতো। ১০৮টি বুলেটিন প্রকাশ করা হয়েছিল, যার মাত্র কয়েকটি লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরি এবং ঢাকার বাংলা একাডেমিতে সংরক্ষণ করা গেছে। ১৯৬৫ পর্যন্ত এই আন্দোলন পুরোদমে চলেছিল; বিখ্যাত হাংরি মামলার পর তা ভেঙে যায়। আন্দোলনটি নিয়ে মলয় রায়চৌধুরী হাংরি কিংবদন্তি নামে একটি গ্রন্হে আন্দোলনের ইতিহাস তত্ব ও তথ্য নিয়ে বিস্তারিত লিখেছেন। পরবর্তীকালে প্রণবকুমার চট্টোপাধ্যায়ের সম্পাদনায় নথিপত্র, আদালতে সাক্ষ্য, আদালতের রায় এবং হাংরি আন্দোলনকারীদের সাক্ষাৎকার নিয়ে প্রকাশিত হয় হাংরি আন্দোলন গ্রন্থ। মলয় রায়চৌধুরী তিরিশ বছর যাবত সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, সেগুলি একত্রিত করে প্রকাশ করেছেন প্রতিভাস প্রকাশনী।
আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বি.দে "মলয় রায়চৌধুরী ও হাংরি আন্দোলন" বিষয়ে ৩৫০ পৃষ্ঠার গবেষণাপত্রের জন্য ডক্টরেটে লাভ করেন। ২০১৩ সালে হাংরি আন্দোলন নিয়ে আইআইটি খড়গপুর থেকে ডক্টরেট করেছেন অধ্যাপক রিমা ভট্টাচার্য। ১৯৯৭ সালে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এ বিষয়ে ডক্টরেট করেছেন অধ্যাপক উদয়নারায়ণ বর্মা। দেবায়ুধ চট্টোপাধ্যায় হাংরি আন্দোলনের কবি দেবী রায় সম্পর্কে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১৮ সালে এমফিল করেছেন। রূপসা দাস ২০১৮ সালে মলয় রায়চৌধুরী সম্পর্কে গবেষণা করেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ড্যানিয়েলা ক্যাপেলো হিডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট করেছেন।
★প্রচণ্ড বৈদ্যুতিক ছুতার
মূল নিবন্ধ: প্রচণ্ড বৈদ্যুতিক ছুতার
১৯৬৪ সালে হাংরি বুলেটিনে প্রকাশিত প্রচণ্ড বৈদ্যুতিক ছুতার কবিতাটির জন্য মলয় অশ্লীলতার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন এবং ৩৫ মাসব্যাপী কোর্ট কেস চলে । কলকাতার নিম্ন আদালতে সাজা ঘোষণা হলেও, ১৯৬৭ সালে উচ্চ আদালতে অভিযোগমুক্ত হন । মলায়ের পক্ষে সাক্ষী ছিলেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, তরুণ সান্যাল, জ্যোতির্ময় দত্ত এবং সত্রাজিত দত্ত । মলয়ের বিরুদ্ধে সাক্ষী ছিলেন শক্তি চট্টোপাধ্যায়, শৈলেশ্বর ঘোষ, সুভাষ ঘোষ, পবিত্র বল্লভ, সন্দীপন চট্টোপাধ্যায় এবং উৎপলকুমার বসু । মকদ্দমা চলাকালীন মলয়ের খ্যাতি আমেরিকা ও ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে, এবং বিভিন্ন ভাষায় এই কবিতাটি অনুদিত হয় । ৪৫ বছর পরও কবিতাটি নিয়ে বিতর্ক কবিতাটিকে জীবন্ত রেখেছে, এবং এম ফিল ও পি এইচ ডি গবেষণার বিষয়বস্তু হয়েছে । গবেষণা করেছেন আসাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অধ্যাপক কুমারবিষ্ণু দে ও রবীন্দ্রভারতী থেকে অধ্যাপিকা স্বাতী বন্দ্যোপাধ্যায় । ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশিত 'Modern And Postmodern Poetry Of The Millenium' সংকলনে দক্ষিণ এশিয়া থেকে অন্তর্ভুক্ত এইটিই একমাত্র কবিতা বলে ভূমিকায় জানিয়েছেন সম্পাদক জেরোম রোদেনবার্গ। হাংরি আন্দোলন সম্পর্কে The Hungryalists নামে ২০১৮ সালে একটি বই লিখেছেন মৈত্রেয়ী ভট্টাচার্য চৌধুরী । মলয় রায়চৌধুরীর 'প্রচণ্ড বৈদ্যুতিক ছুতার' কবিতাটিকে অধ্যাপক শীতল চৌধুরী বলেছেন এটি বাংলা সাহিত্যে একটি সার্থক ও গুরুত্বপূর্ণ কবিতা।
★সাহিত্যকর্ম
মলয় রায়চৌধুরীর প্রথম কাব্যগ্রন্থ শয়তানের মুখ ১৯৬৩ সালে কৃত্তিবাস প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়েছিল। পরীক্ষা-নিরীক্ষার কারণে গ্রন্হটিকে একটি জলবিভাজক বলে মনে করা হয়। মলয় তার প্রতিটি কাব্যগ্রন্হে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন এবং একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন ধারার কবিতার জনকরূপে বাংলা সাহিত্যে একটি বিশেষ স্থান করে নিয়েছেন। তার কবিতা বাংলাসাহিত্যের সনাতন ঐতিহ্যকে, নিয়মানুবর্তিতাকে, আমূল নাড়া দিয়েছিল। কবিতার ভাষায়, ছন্দে, অলংকারে, চিত্রকল্পে তুমূল ভাংচুর পাঠকের অভ্যস্ত চোখ ও কানকে বিব্রত করেছিল। যৌনতার সংগে তিনি এনেছিলেন ব্যঙ্গ, আত্মপরিহাস ও অসহায় মানুষের নিষগফলতার যন্ত্রণা। উপন্যাস ও ছোটগল্পে তিনি নিজস্ব গদ্য সৃষ্টি করেছেন এবং তার প্রবন্ধকে আপোষহীন বলে মনে করা হয়। তার নাটক তিনটিকে বলা হয়েছে উত্তরাধুনিক, যদিও সেগুলি হাংরি আন্দোলনের সময়ে রচিত। তার প্রবন্ধ ও পোলেমিক্সগুলি থেকে স্পষ্ট হয় কেন তাকে প্রতিষ্ঠানবিরোধিতার জনক বলা হয়। মলয় যাঁদের কাজ অনুবাদ করেছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন উইলিয়াম ব্লেক, জাঁ ককতো, সালভাদোর দালি, পল গঁগা, ব্লাইজি সঁদরা, ত্রিস্তান জারা, অ্যালেন গিন্সবার্গ, লরেন্স ফেরলিংঘেট্টি, পাবলো নেরুদা এবং ফেদেরিকো গারথিয়া লোরকা।মলয় গ্রন্হে সম্পাদক মুর্শিদ এ. এম. ভূমিকায় জানিয়েছেন যে নব্বুই দশকের পর রচিত তার সাহিত্যকর্মকে বলা হয়েছে অধুনান্তিক।
২০১২ সালে তিনি প্রথম গোয়েন্দা উপন্যাস রচনা আরম্ভ করেন। তার সৃষ্ট মহিলা ডিটেকটিভ রিমা খান (নোংরা পরি) একজন ভিন্ন প্রকৃতির চরিত্রবৈশিষ্ট্যসহ উপস্হাপিত। বর্তমান যুগের পুলিশ কর্মকর্তাদের মতো রিমা খান নির্দয় ও নির্মম। মলয় রায়চৌধুরীর গোয়েন্দা উপন্যাসটির নাম ডিটেকটিভ নোংরা পরির কঙ্কাল প্রেমিক।
★সাহিত্যধারা
মলয় রায়চৌধুরীর কবিতা, গল্প ও উপন্যাসের বৈশিষ্ট্য হল যে সেগুলো মুক্ত-সূচনা ও মুক্ত-সমাপ্তি দ্বারা চিহ্নিত; এবং তা বহুমাত্রিক. আঠ্গিক-ভাঙা, ঘটমান, যুক্তির কেন্দ্রিকতা থেকে মুক্ত, কেন্দ্রাতিগ, অফুরন্ত অর্থময়, সংকরায়িত, রাইজোম্যাটিক. অপরিমেয়, ভঙ্গুর বাকপ্রতিমায় আপ্লুত, একাধিক বার্তাবহ এবং ক্যানন-অতিক্রমী।উত্তরপ্রবাসী পত্রিকার হাংরি আন্দোলন সংখ্যায় অধ্যাপক নন্দলাল শর্মা জানিয়েছেন যে, স্বয়ংসম্পূর্ণ শিল্পবস্তু বা 'আর্ট ফর আর্ট সেক'-এর ঔপনিবেশিক তত্বকে বর্জন করার কথা বলেছেন মলয়, যা বাংলা সাহিত্যে তার পূর্বে কেউ বলেননি ।
★চলচ্চিত্র
শ্রীজিত মুখোপাধ্যায় বাইশে শ্রাবণ নামে একটি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন। চলচ্চিত্রটিতে একজন হাংরি আন্দোলনকারীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন পরিচালক গৌতম ঘোষ। মলয়ের প্রচণ্ড বৈদ্যুতিক ছুতার কবিতাটি নিয়ে মৃগাঙ্কশেখর ও হ্যাশ তন্ময় একটি ছোটো চলচ্চিত্র তৈরি করেছেন যেটি বিভিন্ন দেশের চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কৃত হয়েছে।
মলয় রায়চৌধুরীর দুটি বিখ্যাত কবিতা 'প্রচণ্ড বৈদ্যুতিক ছুতার' এবং 'মাথা কেটে পাঠাচ্ছি যত্ন করে রেখো' ইউ টিউবে আবৃত্তি করেছেন দুই বাংলার প্রখ্যাত বাচিক শিল্পী । তাঁরা হলেন জয়িতা ভট্টাচার্য, তনুময় গোস্বামী, সাদিয়া সোবহান সারা, লাবণ্য শাহিদা, মোহনা সেতু, শারমিন সুবহা, কৌস্তুভ দে সরকার, চৈতালী বিশ্বাস ও সুস্মিতা বোস ।
★পুরস্কার
প্রতিষ্ঠানবিরোধীতার কারণে মলয় রায়চৌধুরী ২০০৩ সালে অনুবাদ সাহিত্যের জন্য প্রদানকৃত সাহিত্য অকাদেমী পুরস্কার সহ বহু লিটল ম্যাগাজিন পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছেন।


Post a Comment

Previous Post Next Post