শ্মশান ঠাকুরের "শয়তান সাধনা"
বইয়ের ধরনঃ উপন্যাস
প্রকাশ কালঃ ফেব্রুয়ারী-২০২৪
প্রকাশকঃ নাজমুল হুদা রতন
প্রকাশনীঃ সাহস পাবলিকেশন্স
ফর্মাঃ ৪ ফর্মা
মূল্যঃ গায়ের মূল্য ২০০ টাকা
শয়তান সাধনা উপন্যাসটি পড়ার আগে কবি ও ঔপন্যাসিক শ্মশান ঠাকুরের একটা কাব্যগ্রন্থ "হাহাকারের হাসি" এবং অপর আরেকটি উপন্যাস "কৃষাণীর চন্দ্রিমা" পড়েছিলাম। দুইটা বইই দুর্দান্ত।
তবে লেখকের কবিতা লেখার ধরণ আর উপন্যাসের ধরণ সম্পূর্ণ ভিন্ন। এটা খুবই স্বাভাবিক ও প্রাসঙ্গিক।কিন্তু লেখকের একটি বৈশিষ্ট্য উভয় ক্ষেত্রেই এক এবং তিনি মনে হয় বদ্ধ পরিকর। তা হলো পাঠকের কাছে মূল বিষয় বা বক্তব্য প্রকাশের জন্য ঠিক যতটুকু প্রয়োজন তার বেশী অহেতুক অপ্রয়োজনীয় কোন কথা তিনি বলেন না বরং বলা যায় পছন্দ করেন না। বিশেষত কবিতার ক্ষেত্রে তিনি খুব বৃহৎ, বিষদ ও গভীর বিষয়কে খুবই সংক্ষিপ্ত করে বলেন বা উপস্থাপন করেন। যেমন হাহাকারের হাসির একটি কবিতা-
"ভাঙ্গো
যদি আমাকে ভেঙ্গে নিজেকে গড়তে পারো"
আরেকটা কবিতায় বলছেন-
"কোকিল ছিলাম
তোমার আবর্জনা পরিষ্কার করতে কাক হয়েছি"
লেখকের সদ্য প্রকাশিত উপন্যাস 'শয়তান সাধনা' তেও এই একই বৈশিষ্ট্যের ব্যতিক্রম হয়নি।
কারণ আমার কাছে মনে হয়েছে এই ৬৪ পৃষ্ঠার বইটি অনায়াসে দুইশ বা তিনশ পৃষ্ঠার হতে পারতো একই বিষয়বস্তু দিয়ে।
চলে যায় মূল প্রসঙ্গ "শয়তান সাধনায়"
সাধারণত আমরা সাহিত্যে যে ধরণের উপন্যাস পড়ে অভ্যস্ত, "শয়তান সাধনা" সম্পূর্ণ তার ব্যতিক্রম। সাধারণত উপন্যাসে আমরা মূল চরিত্র দেখে থাকি নায়ক, নায়িকা এবং খল চরিত্র এবং প্রেক্ষাপট বা পটভূমি থাকে মানুষের ব্যক্তি জীবন, পরিবার, সম্পর্ক, সমাজ, রাষ্ট্র, রাজনীতি, পৃথিবী, প্রকৃতি ইত্যাদি। কিন্তু এই উপন্যাসের মূল চরিত্র শয়তান, ঈশ্বর বা স্রস্টা এবং মানুষ। আর প্রেক্ষাপট বা পটভূমি হলো সাধনা এবং প্রার্থনা এবং তার কৌশল ও ধরন।
গল্পের শুরুতে দেখা যায় একটি চরিত্র, যে ছোটবেলা থেকেই নেগেটিভ শক্তি বা কালো শক্তি বা শয়তানের শক্তির প্রতি আগ্রহী থাকে। মূলত সে তার প্রেমিকা বা কামনার নারীকে বশ করার জন্য এই নেগেটিভ শক্তির দিকে আগ্রহী হয় এবং ক্রমশ এই শক্তির প্রতি তার ঝোঁক প্রবল হয়, সে দেশ দেশান্তরে ঘুরতে থাকে এই শক্তির আসল উৎস ও সঠিক চর্চায় একে রপ্ত করার কৌশলের খোঁজে। অবশেষে সে দেখা পায় নব্বই বছর বয়সি জটা চুল দাড়ির এক সাধুর এবং তার শিষ্যত্ব লাভ করে। এর পর শুরু হয় তার প্রাথমিক সাধনা। ভয়ঙ্কর সব বিষয়ের ভিতর দিয়ে এগোতে থাকে তার সাধনার একেকটি ধাপ। গুরুর কাছ থেকে রপ্ত করতে হয় খালি হাতে উড়ন্ত পাখি ধরার কৌশল। মনকে স্থীর করার এবং আত্মাকে দেহের মোহ থেকে মুক্ত করার কৌশল। যা তার সাধনায় পরবর্তীতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভাবে কাজে লাগবে।
এরপর শুরু হয় তার সাধনার বিভিন্ন পর্যায়। সেই ৯০ বছর বয়সি সাধু যে তার গুরু ছিল, সেই গুরু তাকে নারী বশীকরণে শয়তান প্রয়োগ মন্ত্র শেখান। এই মন্ত্রের সাথে ছিল কিছু আচার।
প্রথমে বেসন দিয়ে একটি চারমুখো প্রদীপ তৈরি করতে হয়, প্রদীপের চার কোণে কালো পাখির রক্ত এবং নিজের হাতের অনামিকা আঙ্গুলের রক্ত লাগিয়ে চারটা সলতে তৈরি করতে হয়। এরপর উলঙ্গ হয়ে দক্ষিণ দিকে মুখ করে বসে লোবানের ধোঁয়া দিয়ে একটা পাত্রে ছোলা ও ভুট্টা ভাজা সাজিয়ে রেখে গুরুর শেখানো সেই মন্ত্র ১০৮ বার জপ করে উলঙ্গ অবস্থায় শুয়ে পড়তে হবে। প্রদীপ যতক্ষণ জ্বলবে, সেই নারীকে কল্পনা করে ঘুমিয়ে যেতে হবে। এখানে মন্ত্রে যে নারীর নাম উচ্চারণ করা হবে, তার সাথে শয়তান এক রাতে সাতবার সঙ্গম করবে সাধকের রূপে। এতে সেই নারী বা পুরুষ ব্যাকুল হয়ে সাধকের পায়ে ধরবে নিজেকে রক্ষা করার জন্য এবং সাধকের পূর্ণ বশীভূত হয়ে যাবে।
এই নারী বশীকরণের সময় সে বুঝতে পারে তার গুরু সেই ৯০ বছর বয়সি দাড়ি-মাথায় জটওয়ালা বৃদ্ধই ছিল শয়তানের আরেক রূপ। কারণ, তার বশীভূত নারীদের সাথে সঙ্গম রত অবস্থায় নারীরা তার ভেতর সেই বৃদ্ধকে মাঝে মাঝে দেখতে পেত। রূপ স্থানান্তর করে বৃদ্ধ তার শিষ্যের রূপে নারীদের কাছে গিয়ে তাদেরকে বাধ্য করত শিষ্যের দৃশ্যমান দেহের কাছে আসতে আবার শিষ্যের রূপেও তার দেহ স্থানান্তর হতো সঙ্গমের সময়। সেটা খুব কম মুহুর্তের জন্যে হলেও হতো।
বশীকরণ থেকে শক্তি ধারণ, প্রাণ থেকে প্রাণে প্রবেশ, কত সাধনা। মানুষের দেহ এক বস্তুর মতো। ক্ষুধা-কামনা-অনুভূতির মিশ্রণ। তাকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন কিছু নয়। তার মগজের ভেতর দৃশ্য-গন্ধ-ানুভূতি শক্তি রূপে থাকে। দেহের সাথে পরমের সম্পর্ক নেই। তাইতো শয়তানের নিয়ন্ত্রণ বা নেগেটিভ শক্তি এত শক্তিশালী এই দেহ-জগতে। ধর্মালয় থেকে শয়তানের পূজার বলি বা কোরবানি, সবই এখন শয়তান সাধকের কালো টাকায় হয়। এক চোখা ক্যমেরা যা দেখায় তাই এখন সত্য মানুষের কাছে।
তবে সাধনার এ পথ সহজ নয়। সব অর্জনেই কিছু ক্ষয় করতে হয়। বলি দান করতে হয়। উপহার-ঘুষ-লুট-ধর্ষণ হত্যায় যেমন সামাজিক শয়তানের রূপ আছে, তেমনি সাধনারও আছে বিভিন্ন ধাপ এবং চর্চা। তার কোনটিকেই সহজ বলা যাবে না। সবচেয়ে সহজ এবং যেটা প্রকাশ করতে বাধা নেই, সেই পথই অর্ধেক শিষ্য শেষ করতে পারে না। দেহ থেকে ইচ্ছাকে বড় করে দেখা, সেখানে ভয়-কষ্টকে অতিক্রম করে দেহ এবং মনকে সাধনার পথে প্রবেশ করাতে হয়।
অবশেষে এক যোগী, যে কিনা ঐ স্থানের সব থেকে বড় যাদুবিদ্যা জানা। সেই মাহেন্দ্র দেব যোগীর কাছে এই পথের প্রথম হাতে খড়ি হয়। যাদুর বস্তু বা উপহার পাওয়ার জন্য কয়েক বছর সাধনা করতে হয়। এ পথে ভাগ্য এবং জয় একসাথে থাকতে হয়।
এবার শুরু হয় সাধনার মাধ্যমে শয়তানের উপহার পাওয়ার জন্য বিভিন্ন আচারের ধাপ। প্রথমত খোঁজ রাখতে হবে শনিবারে মারা যাওয়া বেশ্যার। সাধনায় শক্তি থাকায় সে ভাগ্য দ্রুত খুলে যায়। সেই বেশ্যার দাফনের পরের আমাবশ্যায় কবর থেকে দাফনের কাপড় তুলে নিয়ে আসতে হবে। গোরস্থানের এক মাইল দূর থেকে শরীরের সব কাপড় খুলে সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে সেই কবর থেকে তুলে আনতে হবে কাফনের কাপড়।
এরপর সেই দাফনের কাপড়ে কিছু মুড়ি আর চিড়া আলাদা করে শনিবার রাতে শ্মশানের সামনে রেখে আসতে হবে নিয়ম করে। নিয়ম অনুযায়ী সকালে সূর্য উঠলে নিয়ে এসে ঘরের চালে শুকিয়ে নিতে হত। বাড়িতে কাপড় মুড়িয়ে শুকাতে দেওয়ার সময় সারা বাড়ি ভার হয়ে যেত। বাড়ির সবার চরিত্রেও পরিবর্তন আসত।
এরপর আবার অপেক্ষা। তুলা রাশির মেয়ের চিতা লাগবে। মঙ্গলবারের পোড়ানো চিতা। এরপর শুরু হয় শ্মশানে ঘর সংসার আর অপেক্ষা। চোখের সামনে মানবদহ পুড়তে আর পোড়াতে দেখা। দেহ খুব অল্প সময়ের তামাশা। নিজের সাথে নিজের খোলশের খেলা। মুখোশের সমাজ তাকে দাফন বা পুড়িয়ে দেয়। দেহ কখনো প্রকৃতি গ্রহণ করে, কখনো মুখোশধারী জীবন্ত মানুষ তাকে প্রকৃতির কাছে নিক্ষেপ করে।
ভাগ্য খুলে যায়, মিলে যায়। তুলা রাশির বালিকার চিতাও ভাগ্যে জুটে গেল। এখন সেই কাফনে মোড়ানো চিড়ামুড়ি নিয়ে শ্মশানে যাত্রা। ধীরে ধীরে কাপড় খোলার সময় পরিচিত শ্মশান অপরিচিত হতে লাগলো। কোমরের কালো সুতাটিও ছিঁড়ে ফেলার সাথে সাথে আকাশ যেন কালো মেঘে অন্ধকার হয়ে গেল। শ্মশানের মাটিতে পা রাখতেই অসংখ্য বাদুড় মাথার খুব কাছ দিয়ে ডানার শব্দে হুঁশিয়ারি জানিয়ে গেল। এ কেবল মায়ার শুরু। পুরো কাজ শেষ করতে এখনো অনেক মায়ার পাহাড় সফল ভাবে ডিঙ্গোতে হবে। একটু বেখায়ল বা ভুল হলেই নিশ্চিত পৈশাচিক মৃত্যু। শ্মশানের ফটক পার হতেই বাতাসে অদ্ভুত নারী কন্ঠের মিষ্টি হাসির শব্দ। কামনা দিয়ে শয়তানের পথে যাত্রা শুরু। নাম ধরে ডাক দেয় সেই নারী কন্ঠ। নারী দেহ তুচ্ছ কামনা। শক্তির কামনার কাছে দৃশ্যমান বস্তুগত দেহ খুব সামান্য। একটু সামলে নিয়ে বাম হাতের মুঠোয় করে সেই চিড়ামুড়ি কাঁধের পিছন দিয়ে ছিটিয়ে দিতেই মনে হলো শ্মশানের সবগুলো কুকুর একসাথে জড় হয়ে কামড়াকামড়ি করে তাই খাচ্ছে। কিন্তু ভুলেও পিছন ফিরে তাকানো যাবে না।
নানান রকম মায়া, ভয় একসাথে আসে মনে হয় শ্মশানের মড়াগুলো আধপোড়া হয়ে আরো আগুনের আাশায় চেয়ে আছে। ভয় বেশি লাগলেই চিড়ামুড়ি পিছনে ছিটাতে ছিটাতে এগিয়ে চলা।
একটা চিতাকে কেন্দ্র করে কেউ নাচছে। একটা শিশুর কন্ঠ থামতে বলছে, পা ভারি হয়ে যাচ্ছে। যে নাচছিল তার শরীর থেকে কাপড় খুলে যায়। কিন্তু নৃত্যরত নগ্ন নারীর দিকে তাকালে বাকি জীবন শুধু কামেই আটকে থাকতে হবে। পিছনে চিড়ামুড়ি ছুঁড়ে দিয়ে শরীরের জোরে সামনে চলা। সামনে তাকাতেই দেখা যায় উল্টা হয়ে ঝুলে আছে গুরু। জীব বের করা চোখে রক্ত। মুখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে লালা। কাটা গরুর মত ফ্যাসফাসে স্বরে গুরু বলে " ভুল হয়ে গেছে রে! বাড়ি যা। ভুল সাহস ঠিক না। গুরুকে অতিক্রম করে সামনে যেতেই বোঝা যায় মায়ার পর্ব শেষ হয়েছে।
সামনে থেকে একটা মহিষ আসছে। দুই শিংয়ের মাঝে বসে আছে ছোট প্রেতিনি। তার হাসির শব্দ বুকের ভেতরে সাহসের শেষ পাঁজরে গিয়ে ধাক্কা মারে। তাকে শান্ত দেখা গেল। এটা শুভ লক্ষ্মণ। মহিষ পাশ দিয়ে যাবার সময় শিংয়ের মাঝে বসে থাকা লিলিপুটের মতন প্রেতিনিকে এক থাবায় ধরে ফেলতে হবে। কোন কারণে ধরতে না পারলে সব সাধনা শেষ। মৃত্যু হবে জ্বর আর রক্ত বমি হয়ে। মনে পড়ে যায় গুরুর হাতে ধরে শেখানো উড়ন্ত পাখি ধরার কৌশল। মহিষ হাতের সিমান্তে আসতেই ছোঁ মেরে প্রেতিনিকে থাবা দিয়ে হাতের মুঠোয় নিয়ে নেয়। মহিষ শান্ত ভাবে চলে যায়। প্রেতিনি মানুষের মত কঠিন কন্ঠে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলে, " ভালো হবে না তোর"। কোন ভাবে ভয় পেয়ে গেলে আর প্রেতিনি তা বুঝে গেলে হাতের ভেতর ধরে রাখা যাবে না, হাত ফসকে ঘাড়ে বসে তার দাস বানিয়ে ফেলবে। মাঝ পথে আটকে থাকা পাগল সাধুর সংখ্যা কম নয় জঙ্গল এবং সংসারে। আজকের দিনটা সর্বোত্তম এবং শয়তানের শক্তি সাধনার পর্বে বিশেষ একটা ধাপ অতিক্রম করার সময়।
জমা করে রাখা চিড়ামুড়ি শেষ, এখন আর সেই মায়ার কুকুরকে তাড়াতে হবে না। মন্ত্র পড়তে পড়তে যেতে হবে চিতার কাছে। চিতার যা কিছু পাওয়া যায় কড়ি, পয়সা, খণ্ড হাড়, ছাই সবকিছু সেই কাফনের কাপড়ের ভেতর নিতে হবে। প্রেতিনি এখন চুপ হয়ে গেছে তবু এক হাতে চিতার সব কিছু অপবিত্র কাপড়ে মুড়ে নিয়ে যেতে হবে শ্যাওলা পুকুরে। যেখানে চিতার সবকিছু ধোয়া এবং চিতার আগুন শেষ হওয়ার পর ছাই সহ সবকিছু ফেলে দেওয়া হয়। পুকুরে নেমে পায়ের নিচে পানি স্পর্শ করতেই হাতের প্রেতিনিকে পানিতে ছুঁড়ে দিতেই বিশাল এক শোল মাছ হয়ে লেজ ঝাপটে কচুরিপানা সরিয়ে যায়গা বের করল। কচুরি পানার মাঝে কালো পানি চোখের মত দেখায়। অন্য হাতে ধরে রাখা চিতার ছাই সহ কাফনের কাপড় সেই কালো পানিতে ছুঁড়ে মেরে মনে মনে এক থেকে তের গুনতেই পানি থেকে লাফ দিয়ে একটা হাড় উঠলো। কোন জারজ বাচ্চার বাম হাতের হাড়। বাম পায়ের হাড়ে শক্তি আরো বেশি। কিন্তু শয়তানের ঘরের সন্তান ছাড়া কেউ তা খুব একটা পায় না। শুন্যে ওঠামাত্র হাড়টাকে ধরে ফেলতে হয়। সাথে সাথে মরা কান্না শুরু হয়ে যায়। কচুরিপানা থেকে আকাশ যেন কান্নায় ভেঙ্গে যাচ্ছে। এতোদিনের সাধনার উপহার এখন হাতের মুঠোয়। এবার ফিরে আসার পালা। মাঝ শ্মশানে দেখা যায় মা দাঁড়িয়ে আছে। কেউ তার গলা চেপে দম বন্ধ করে দিচ্ছে আর সে বলছে তাকে বাঁচাতে। কিন্তু বিজয়ের শক্তি এখন মায়ার জাল তুচ্ছ করে দিয়েছে। ওটা ছিল জীবনের একটা অর্জন। তবে শক্তিকে কখন কি ভাবে ব্যবহার করতে হবে, সে শিক্ষা যার যতক্ষণ হয় না, তার পক্ষে সে শক্তি অর্জন ততক্ষণ সম্ভব হয় না।
কিছুদিন পর শয়তান সাধকদের সাথে পরিচয় বেড়ে যায়। পরিচয় হয় এ্যানি বেন গ্যাট নামে একই বয়সি এক ইহুদি নারীর সাথে। আমেরিকার সান ফ্রান্সিসকোতে শয়তানের গির্জা করেছে তারা। চার্চ অব স্যাটান। এই এ্যানি বেন গ্যাটের কাছে পাওয়া যায় তার এক পূর্বপুরুষের ডায়রি। যে ছিল একজন একনিষ্ঠ সাধক। সেই সাধকের ডায়রি থেকে জানা যায় সাধনার আরও অনেক বিষয়।
আধুনিক পাপের অর্থ লুকানো প্রতিটা ধর্ম প্রতিষ্ঠানে। সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত ঈশ্বরের নামে এবং ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে নিজের জ্ঞাতে-অজ্ঞাতে নিজের ভেতর শয়তানের চর্চা এবং গোলামী করছে। ঈশ্বরকে করছে অপমান। ইশ্বরের আদেশ নিষেধ যা তিনি মানুষের দৈনন্দিন জীবনে নিজেদের জীবন পরিচালনার নিয়ম হিসেবে বেঁধে দিয়েছেন। মানুষ সেসব ভুলে অনেক দূরে সরে গেছে। কেবল মাত্র ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে সামাজিক নির্দিষ্ট কিছু আচার অনুষ্ঠন পালনের মাঝে সীমাবদ্ধ রেখেছে। তাও আবার তা করছে শয়তান প্রদত্ত সম্পদ দিয়ে। শয়তানের পথের ঘুষ, সুদ, জুলুম আার লুটের সম্পদ ব্যায় করছে ঈশ্বরের খুশিতে, ধর্মালয়গুলোতে। শয়তান চর্চার অংশ হিসেবে তা ধনী এবং শক্তিশালীদের ভেতর বন্টন করা হচ্ছে। ধর্মালয়গুলো স্থানীয় মানুষের ঘরের চেয়ে যত বেশি দামী হবে, শয়তানের শক্তি তত বেশী মজবুত হবে।
আন্তরিক ধন্যবাদ ও ভালোবাসা হরকরা প্রকাশন এবং প্রিয় সাগর ইসলাম কে
ReplyDeleteশুভ কামনা কবি
Delete