গল্প/ জলে পানিতে জলরঙ/ সাগর ইসলাম/ হরকরা প্রকাশন

গল্প: জলে পানিতে জলরঙ/ সাগর ইসলাম


সংগৃহিত স্কেচ






--"অফিসে যাবিনা, রনক?'
--" কোন অফিসে, কার অফিসের কথা বলছো, মা?"
--"তোর বাবার অফিস।"
--"বাবার অফিসে আমি যাবো কেনো, আমি ত আমার জৈবিক কাজে যাবো, যা মাস শেষ হলে মোটা কয়েক হাজার টাকা আমার ব্যাংক হিসাব খাতে জমা হয়। বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ বোধ করি যখন তার উপরিপাওনায় গার্লফ্রেন্ডের আল্হাদের বায়নায় হাসি জাগাতে পারি। অফিস বলছো কেনো, সে ত বাবার পদক,আমার কমার্শিয়াল।
--"তুই কি কখনো পাল্টাবি না, রনক?"
--" কেন গো মা, আমার এই কালো বর্ণ মানুষরূপী দেহটায় তুমি সন্তুষ্ট না?" আমার এ রূপ কি তোমার সন্তান নাম পাবার যোগ্য মনে হচ্ছেনা, আমাকে পাল্টাতে হবে তার জন্য। আমি যে মা মন পাল্টানোর অধিকার রাখি, রূপ পাল্টানোর শক্তি আমার নেই।
---" বলি কি আর তুই বুঝোস কি! যুক্তি বাদে যা ত, তোর বাবা কোথায় যেনো যাবে তাড়া আছে। যা তাড়াতাড়ি যা।"
--" দেও মা, দুটো ডানা লাগিয়ে দেও, ঘাসফড়িঙের মতো উড়ে উড়ে যাই....
কথাটি বলেই রনক উন্মাদের মতো হেসেদিলো। ছেলের পুংটামি হাসির আয়োজনে মা নিজেও আত্মীয়,মুগ্ধ আদুরে হাসির টোল যেনো মা কে শ্রেষ্ঠ মায়াবতী মা বলে পরিচয় দেয়। রনক মায়ের টোল পড়া গালে চুমু খেয়ে নিজের কাজে বের হলো। বাবার অফিস যার কাজের মাধ্যম। যেখানে টিকে থাকার মাস্টাররুল বা পার্মানেন্ট বলতে কিছু নেই। বাবার ধমকই স্থায়িত্বের চুক্তিনামা!!
শুক্রবার। সূর্য তাজা দুপুরবেলা অন্ধকারে লেপ্টে দিয়েছে রনক। ঘুমের বিছানায় আস্তবড় এক অর্ধমৃত দেহ পড়ে আছে চার হাত'পা ছেড়ে। দেহের রূহুটা নিরাকার রূপেই ঘুরে আবার নিরাকার রূপেই অর্ধমৃত দেহে প্রবেশ করে। নিজেকে না দেখার আমিটা নিজের ভিতরে স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটায়। মানুষ অর্ধমৃত থেকে পূর্ণ জন্ম নেয়, শ্বাস কাটে, হাত পা নড়েচড়ে। রনক তাই করলো সে শক্তি পেয়ে। নেড়েচেড়ে উঠলো সমস্ত গা। ডুবকে উঠা হাঁসের পাখার মতো হাত দুটো ঝাপ্টিয়ে ফ্যাক করে ঘড়ীটার দিকে তাকালো। ঘন্টার টিকটিক কাটা চারটে টপকায়ে চারটে পনেরো। রনক অবাক। যেনো গত কিছু সময়ে জীবনের মহামূল্যবান কিছু হারিয়ে ফেলেছে। ভাবলো, মানুষ ঘুমকে হারায় না-ঘুম মানুষকে হারায়। ভাবনা বাদে চটপট করে ভদ্র পোষাকে প্রস্তুত হলো রনক। ফোনটা হাতে নিয়ে দেখে একগাদা কল নোটিফিকেশন জমে আছে। অন্তরআত্মার ঝাঁকুনি আরো তীব্র। প্রেমের দেবী এবার ব্রেকআপের আজ্ঞা না দিলেই হয়! তড়িঘড়ি করে রওনা হলো ডিসি লেকের দিকে। প্রেমের দেবী যেখানে নিশ্চিৎ মনের পার্ক,অপেক্ষা করছে।
রনকের উপস্থিত কবিতা মুগ্ধ চোখে মেনে নিতে পারেনি।দেরি হওয়ায়। অপেক্ষার চোখ রাগে ক্ষ্যাপা আগুন। রনক নরম স্বরে বললো:
‎---" ঐ আগুনটা নেভাও না কবিতা,নয়তো আমি ঝলসে যাবো চোখের আগুনে। ভয়টা যে আমাকে করিনা কবিতা, ভয়টা তোমার ঐ আগুন চোখে।
‎--" সো হোয়াট? তোমার আসার কথা তিনটায়, এখন কয়টা বাজে, দেখো..... চারটা পঁয়তাল্লিশ । খুব ত বলো, ভালোবাসি! এই কি ভালোবাসার প্রমাণ?"
‎---"অপেক্ষার সময় বুঝি ভালোবাসার অপ্রমাণ দেয়,আমার আর তোমার হৃদয়ের টান বুঝি ভালোবাসা না,অপ্রমাণের হার্ট এটাচমেন্ট?"
‎--" জাস্ট এনাফ! স্টপ... একদম চুপ। একটা কথাও বলবা না তুমি, ইরেসপোন্সিবল ছেলে একটা।"
‎---" চুপ থাকলে কি রেসপন্সিবল হবো কবিতা?"
‎--" আবার কথা..... সোজা চলো আমার সাথে।"
---" কোথায়?"
---" জাহান্নামে। কেন যাবেনা?"
--" জান্নাত যদি জাহান্নামের চৌরাস্তায় নেয় দোষের কি, চলো।" আচ্ছা সেখানেও কি তোমার ঐ চোখের আগুনের মতো বড় কিছু জ্বলছে?"
---" হ্যাঁ, আমার বাবার চোখ আমার চোখের চেয়েও বড়, গাঢ়!
--"মানে?"
---"মানে কিছুনা। বাবা তোমার সাথে কথা বলবে।
---" এখন, কেনো?"
---" সে গেলেই বুঝতে পারবে, চলো।
---" তার আগে বলো, তুমি ত আমাকে ভালোবাসো ভেতর থেকে?"
---" না তা বাসবো কেনো, বাইরের কাপড় দিয়ে ভালোবাসি, কাপড় খুলে দেখাবো তার ভার?"
---" তুমি কবিতা সত্যিই তুমি! সর্বারূপী, সর্বাজ্ঞানী..
--" সর্বারূপী মানে?"
---" ঈশ্বর তোমাকে রূপের সব সুন্দর দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। বাকি সৌন্দর্য টুকু আমাকেই না হয় আবিষ্কার করতে দাও, কিছুটা আমার মধ্যেও রাখি!!
--" তুমিনা.....
রনক আর কবিতার এমন প্রেমের আকর্ষণ যেনো-সূর্য আর চাঁদের অমিলন আলোকেও মিলনের গোধূলী করে তুলে। স্থির আলো-কালোর মুগ্ধ গতী। মনের মধ্যে লুকিয়ে থাকা ভালোবাসা সন্ধের মতো উদয় হয়, রাগের সূর্যটা অস্ত যায় তার আকাশে!


আস্তবড় গনেশের মতো ঢ্যাপঢ্যাপা ফুলো পেট একেবারে শ্বাস ছেড়ে দিয়ে হুইল চেয়ারে বসে আছে জহির চৌধুরী।হাতে একটি সিগারেট। কেবলই ধরিয়েছে। শুকটানের গোড়া অবদি পৌঁছাতেনা পৌঁছাতেই বার্ণিশ করা মেহগনি কাঠের দরজায় ক্যাঁচক্যাঁচ শব্দ স্পষ্ট। সাথে সাথে ট্রে'তে টুকে পড়লো সিগারেটের এক টুকরো ছাই। ধোঁয়া বাষ্পায়ন। বাঁশি ফাঁটা মোটা গলা আওয়াজ জহির চৌধুরীর।নরম করে বললেও দেয়ালে ধাক্কা লাগে। কথার আওয়াজ প্রতিফলন হয় চারদেয়ালের কোণায় কোণায়।মেয়ে কবিতাকে দেখে চোখটায় মটক ফেললেন। সিগারেট দু আঙুলের চিবিতেই পুড়ে যাচ্ছে। বললেন:
---" আয় মা, বস। এই বুঝি তোর প্রিয় মানুষ? দেখতে ত প্রিয়জনদের মতই, চমৎকার! বসো,তুমিও বসো।
রনক গলায় অপ্রস্তুত কয়েকটি ঢোক কেটে সোফায় বসলো, জহির চৌধুরীর নাক বরাবর।কবিতা ডানপাশে। হাতে উছুলা মাত্র খবরের কাগজ। জহির চৌধুরী পূনরায় সিগারেটে টান দিলেন। মাজাটা একটু ঝেঁকে নিলেন চেয়ারের নরম গোদিতে। রনক'কে উদ্দেশ্য করে বললেন:
---" তোমার সম্পর্কে জানার তেমন কিছু বাকি নেই। সবই শুনেছি কবিতার মুখে। ব্যস্ততার জন্য তোমার সাথে সাক্ষাত যোগাযোগ হয়নি। ত এবার নিজের মুখেই বলো, নাম কি তোমার?"
--" যদিও কবিতা মিথ্যে বলেনি, আমি রনক। তবে আমি যদি রনক চ্যাটার্জী বলি , তাহলে কি কবিতাকে মিথ্যে মনে করবেন?"
জহির চৌধুরী রনকের কথায় খানিকটা অবাক।রাতে সূর্য দেখার মতো বিস্মিত চোখ!সিগারেটে এবার স্বজোরে টান দিলেন। কবিতাও রনকের কথায় সাঁতার না জেনে অথৈ জলে নামার অবস্থা।রহস্যের গভীরে যার অনিশ্চিৎ, ভয় তার অস্বাভাবিক নিশ্চিৎ! ভ্রূ টান টান করে তাকিয়ে আছে রনকের দিকে। জহির চৌধুরীর গলার ভলিয়োম বেশ বেড়ে গেল, রেডিওর গ্যারগ্যার লাউড স্পিকারের মতো।বললেন:
---" কি....! তুমি চ্যাটার্জী,... মানে জাতে হিন্দু?"
--" নামে কি জাত দেখা যায়? নাম কি জাত লিখে দেয় আমি মুসলিম নাকি হিন্দু? কাজী সব্যসাচী কি হিন্দু ছিলেন আঙ্কেল?"
--" তুমি কথা এত প্যাঁচাচ্ছো কেন? যা বলবে স্ট্রেন্থ ফরোয়ার্ড বলো..?"
--" কথা ত আপনিই প্যাঁচাচ্ছেন। আমি শুধু প্যাঁচের গীট'টা আরো শক্ত করছি মাত্র।"
--" তুমি কি আমার দুলাভাই হও নাকি, ইয়ারকি মারছো আমার সাথে, বেয়াদব ছেলে?"
কবিতা বাকরুদ্ধ। অস্থিরতার ভেতর প্রকাশ হচ্ছে কেবল কপালের ঘামে।
রনক জহির চৌধুরীর জবাবে বললো:
---" আমার নাম জানার পরও আপনি নাম জিজ্ঞেস করলেন। এখন যদিও জানেন আমি কবিতাকে ভালোবাসি। তথা তারপরও যদি প্রশ্ন করেন আমি কবিতাকে ভালোবাসি কিনা, তাহলে ভালোবাসার পুরো ইতিহাস আপনার সামনে বর্ণনা করতে হবে, মুখস্থ পাঠের মতো।
জহির চৌধুরী সিগারেট টা বৃদ্ধা আঙুলের চাপায় ট্রে'তে স্তুপ করে ফেললেন। পায়ে পা তুলে বললেন:
--" তুমি ত উন্মাদ, অতৃপ্ত ছেলে, নেশাটেশা করো নাকি?"
---" সামান্য, আপনার মতো।আপনি কেবল যা করলেন সেটা করি। বলতে পারেন হারাম তবে বৈধ নেশা।
---"সিগারেট যেহুতে খাও, তাহলে তোমার ভিতরে নিশ্চিই অভাব আছে। ত আমার মেয়েকে সে অভাবের ভার দিবে না ত?"
--" সে অভাবের ভার পুরোটা দিবোটা ঠিক, তবে অল্প দিবো এবং তা আপনাদের সাক্ষাতেই।"
--"মানে!?"
--" মানে, আমি কবুল বলতে পারবোনা বিয়েতে। আমি কবিতাকে বিয়ে করতে রাজি,ভালোবাসি -এতটুকুই ব্যাস।
কবিতা রনকের কথা শুনে নিজেকে অন্য জগতে আবিষ্কার করছে অবগত অপ্রাসঙ্গিক কথার সুনামি তে। ওড়না দিয়ে মুখ,কপালের ঘাম শান্ত করতে পারলেও মনকে শান্ত করতে পারছেনা।অস্থির বুকের কম্পন।রনকের দিকে যতোই তাকায় নিজেকে ততোই হারিয়ে ফেলে। ভাবে,আমি কি বেঁচে আছি নাকি স্বপ্নের আদালতে আসামী পক্ষ, খুন না করেও ফাঁসীর জ্বালা পোহাতে হবে..!
জহির চৌধুরীর এক ফোনকল আসায় অস্থির সময়ে ডুব দেওয়া মনটা স্থির করলেন। বিদায় নিলেন। পরবর্তীতে তার সমস্ত আলোচনা হবে। রনক উঠে দাঁড়িয়ে কবিতার আড় চোখের ভেতরে প্রবেশ করলো। বুঝলো, কবিতা ক্ষেপে আছে ওর প্রতি। ক্ষ্যাপাকে টোকা দিয়ে আরো দ্বিগুণ ক্ষ্যাপামির শক্তি না দিয়ে বরঞ্চো চলে যাওয়াই ভালো। রনক চলে যাবার পথে দু-একবার ফিরে তাকিয়েছে । কবিতা তা বুঝতে পারেনি ঘাড় বেঁকিয়ে ঘন কালো চুলে মুখ ঢেকে বসে থাকায়। সিলিং ফ্যানের দাপটে কেবল কয়েকটি চুল উড়তে ছিলো। আগলা চুলের দুলতে থাকার আনন্দ টুকুই মনের প্রশান্তি করে রনক প্রধান দরজা অতিক্রম করলো। বিনোদনের হলে নির্ঘাত শর্ট ফিল্ম বেমানান!
লাভ এফেক্ট মেয়েদের মায়াবী রূপে যে লাভ সিক্রেট দহনগুলো বেশ বিকর্ষণ করে, চোখ কচলায় মায়ার জলে। ঝলসে যায় বুকের আরাম, শান্তি! কবিতাকেও যেনো সমস্ত জুড়ে জানান দিচ্ছে -এ কি হলো! চাঁদ দেখাতে এসে কলঙ্ক জ্যোৎস্না হলো!!


লম্বা এক সময় সময় অতীত হয়ে গেছে, চারমাস। কবিতার জবানবন্দিতে জোরপূর্বক তবুও 'না'- শব্দটি বলাতে পারেনি-রকনকে ভালোবাসার। বরঞ্চো আরো শক্ত হয়েছে জিদে। মুখে একটাই কথা, আমি রনক'কে ভালোবাসি,ভালোবাসি, ভালোবাসি! এই দির্ঘসময়ে জহির চৌধুরীও খানিকটা পরাজয়ই ছিলো। পরাজয়কেই জয় নিশ্চিৎ করে রনকের বাবা রাশেদ খানের সাথে যোগাযোগ করেন। যোগাযোগ করে জানতে পারেন রনক সম্পর্কে সব। রনক পালিত সন্তান তাদের। রাশেদ খানের অক্ষমতার জন্যই রক্তের সন্তান মেলেনি স্ত্রী জামিলার গর্ভে।রনক'কে আটমাস বয়সেই এক হিন্দু বিকিনি মহিলার কাছ থেকে ক্রয় করে আনা হয়েছিলো। আজকাল বর্তমানে পন্যের মতো রক্তও কিনে পাওয়া যায়। রক্তের পাসোয়ার্ড পরিবর্তন করা যায় অর্থের আউটপুট-এ!!বাবা রাশেদ খান আর মা জামিলা নরম মনের মানুষ। হালকা আঘাত সন্তানকে কখনো দিতে প্রস্তুত নয়। তাই সত্যের ভারটা ভিতরে পুষতে পারেনি। বয়স আঠারোর গোরায় সব বলে দিয়েছে। জন্মসূত্রের পানি-জলের বিপরীত ইতিহাস। জহির তাই ইতিহাসের ঐতিহাসিক প্লট তথা ট্রাজেডি মূল্যায়ণ করে রনক'কে মেয়ের স্বামী করতে রাজি হয়েছে। পারিবারিকগতভাবে দুই পরিবারই একমত। বিয়ের সমস্ত আয়োজনও ঠিকঠাক। শেষ। রনক বিয়ের বার্তা বিশ্বাস করে কিন্তু আস্থা কম। অনিশ্চিৎ চিন্তায় মাথা খায় রাতদিন। কবিতার সাথে কথা হয় আগের মতোই দেখাও তেমনই। কিন্তু ভালোবাসার অলংকার-আবেগ'কে গাঢ় করতে পারেনা। রনকের মনে আবেগ টানেনা প্রেমের শেষ কাঠগড়া বিবাহ বন্ধনের হাকিম শালে এসেও। কোথাও এক ধর্মাদ্রোহী উকিল তার খালাসনামা তর্কবিতর্কেই রেখেছেন! এদিকে কবিতার স্বপ্ন বিছানা কল্পনার রসে টুবটুব। আল্হাদের হাত'পা হাসির চেয়েও ঝাঁকে বেশি। কবিতা যেনো মনে হচ্ছে কলঙ্কের জ্যোৎস্না পাড়ি দিয়ে চাঁদের কপালে চুমু দিতে যাচ্ছে। সে চুম্বিত আকর্ষণের নাম হবে -চাঁদ বনাম চাঁদের দেবী!


শারমিন সুলতানা, কবিতার মা। অন্যরকম সাধারণ বৈশিষ্টের মহিলা। অন্যের প্যাঁচানো কথার সাপের সাত প্যাঁচের ধরণ বুঝে প্যাঁচ ধারণ করতে পারেনা। মনের কঠিনতাকেও সহজ করে প্রকাশ করে -হুম হতে পারে! মরিচ বাতির আলোর বাহারিত ঝলকে সেজেছে জহির চৌধুরীর বাসা। সে যে উচু শ্রেণীর প্রথম সাড়ির কেও একজন তা জানান দেবার জন্য বাসার আয়োজনই যথেষ্ট,বিজ্ঞাপনের দরকার নেই। একমাত্র মেয়ের বিয়েতে বাসা আজ রঙিন। ড্রিমলাইটের চক্করে আত্মীয়ারা সবাই মুগ্ধ। কিশোর কিশোরীরা কেও কেও ফ্যালফ্যাল করে এদিক ওদিক চোখ বুলাচ্ছে। বৃদ্ধ বয়সি স্বজনেরাও বলছে, বাহ্, জহিরের রুচি খুব ভালো। মেয়ের বিয়েতে কত সুন্দর এক আয়োজন করেছে। শারমিন সুলতানা ঘাস ভরা উঠোন ত্যাগ করে বারান্দা টপকানোর অবস্থা। কেও একজন ডাক দিলেন:
---"এই যে শুনুন, বর পক্ষের আসতে কি দেরি হবে?"
---" জ্বী জনাবা তেমন সময় লাগবেনা। রাস্তায়। আসতেছে।" আপনি বরন ঐ গেস্ট রুমে আড্ডা দেন। আশা করি শিঘ্রই চলে আসবে।
--" হ, তাই করি। বড়লোকের সময় বলে কথা,তার মধ্যে বিয়ের সময়! কে জানে ঘন্টা আর সেকেন্ডের পার্থক্য কত!!
কবিতার মা কথাটি শুনে গিললো মাত্র। নতুন শাড়ীর আঁচল ডানহাতে টানটান করে ধরে বললো, "হুম হয়তো। আচ্ছা জনাবা আপনি সেখানে যান, আমি মেয়েটাকে দেখি হলো কিনা।"
বর পক্ষের গাড়ীর শব্দে বারুদ, ফঁটকাবাজির রোল অগনীত। আওয়াজে বুক কেঁপে উঠলেও আনন্দ ক্রমোশ বাড়ে মনের স্বাচ্ছন্দ্যবোধ ঝাঁকিতে। আনন্দের হৈচৈ মাছ বাজারের মাছির মতো ভীড়,ভনভন। কবিতা লাল বেনারসিতে বধূ সাজ লজ্জ্বায় আরো রোমান্সকর করে তুলেছে। রনক একটু ভিন্ন সাজ, সাদা পাঞ্জাবী গায়ে লেপ্টে আছে তবে মাথায় পাগড়ী নেই। রাশেদ খান সন্মান ঢাকা দিলো, মুচকি হাসি কথায়, আধুনীক ছেলে ত।।
জহির চৌধুরী চোখমুখ বকের মতো বেঁকে নিলেন। এদিকে কাজী সাহেব ধর্মের পরোয়ানা দিতে লাগলেন। বললেন :
---" বাবাজি, আধুনীক যাই হোক। ধর্মের নীয়ম ত আর বাদ রেখে বিয়ে হয়না। মাথায় অনন্তো নবীর সুন্নাহ টুপি পড়তে হবে।
রনক নিজের শক্তিতে জেগে গেলো।পাশের সবাইকে চোখ ঘুরিয়ে আবিষ্কার করলো-কেও খুশি কেও মুখভার। মনে হচ্ছে কারোকারো মুখে বিষ ঠুসে দেওয়া হয়েছে। বললো:
--" টুপি বা পাগড়ী না পড়লে কি বিয়ে হবেনা।অনিবার্য বিয়ের মৃত্যু হবে। আমি ত বিয়েতে রাজি, টুপি সেখানে মূখ্য বিষয় হচ্ছে কেনো?"
কথা শোনা মাত্রই সমাচোলনার ঠোঁট কানমুখ হতে লাগলো। ফিসফিস চলছে, ছেলেকি আস্ত নাস্তিক নাকি....
জহির চৌধুরী নিজেকে নিজেই শান্ত করলেন। চুলার আগুন চোখে সন্মানের পানি দিয়ে নিভিয়ে নিলেন। মানুষের কথা কাটিয়ে নিলেন নিজের মতো করে বললেন,আচ্ছা ঠিক আছে, কাজী সাহেব বিয়ে পড়ান!" কাজী সাহেব যথারীতি বাকি সকল কাজ খাতা কলমে করে নিলেন। কবিতা আড় চোখে রনককে দেখছে আর দাঁত নিচের ঠোঁটের আগায় চেপে রাখছে। মনে জেগে উঠছে সংসারের ভার। কাজী এবার বিয়ে নামা পাঠ করে রনককে বললেন:
---" বাবাজি, বলেন আপনি এ বিয়েতে রাজি -কবুল!
--" হ্যাঁ,আমি এ বিয়েতে রাজি।
--"বাবাজি সাথে কবুল বলতে হবে। বলেন কবুল!
--" বললাম ত রাজি। কবুল কবুল বলতে হবে কেনো?"
---" বাবাজি আপনি শুধু শুধু ঝামেলা করছেন। কবুল না বললে যে বিয়ে বৈধ হবেনা। ধর্মের ক্ষেত্রে কবুল বলতেই হবে। বলেন কবুল!
---" কেন আমি যে রাজি, এ মন যে কবিতাকে স্ত্রী বলে মেনে নিয়েছে তা কি আসল নয়! কবুল বলতে হবে কেনো। আমি রাজি রাজি, ব্যাস, কবুল বলতে পারবোনা।
কবিতা রনকের কানের ডগায় ঠোঁট আনলো। বললো রাগের নিরব কণ্ঠে,রনক এটা কিন্তু অতিমাত্রায় ফ্লাটিং হচ্ছে। ফ্লাট করা বাদে, কবুল বলো। রনক জবাবে বললো, না বলবোনা। ওদিকে গার্ডডিয়ানের মুখ পোড়া পাতিলের মতো ফ্যাঁকাসে দেখাচ্ছে। আত্মমর্যাদার ভয়, লজ্জ্বায়। জহির চৌধুরী রাগের সাতসমুদ্র পাড়ি দিয়ে যেনো ফিরে এসেছেন রাগের সিন্ধু জয় করে। চোখ তার সূর্যের লাল বৃত্তে টগবগ করছে। মুখ ফুপড়াচ্ছে ছিঁড়ে যাচ্ছে নরম ঠোঁট বিরক্তের জ্বালায়। কিংকোবড়ার মতো ফোঁসফোঁস, নিঃশ্বাস। কাজীর সন্নিকটে হাজির। থাম্বার মতো দাঁড়িয়ে বললেন:
---" এই, তুমি কি শুরু করছো। হোয়াটস্ প্রবলেম অব ইউ? কবুল বলবেনা কেনো। রঙ্গমঞ্চ পেয়েছো তুমি, যা খুশি তাই করবে..?"
--" যা খুশি তাই কই করতে দিলেন। যদি দিতেন তাহলে এ বিয়ের মঞ্চ অবদি আসতাম না,কবিতাকে অহেতুক এ মঞ্চের বিসর্জন মাধ্যম করা হতোনা। সংসারের চাবি আগেই পেতো। আমি ভালোবাসি কবিতাকে, কবিতা আমায় ভালোবাসে। এখানে কবুল বলতে হবে কেনো। কবুল আমাদের ভালোবাসা কি সত্য নাকি মিথ্যা তা প্রকাশ করবে?"
জহির চৌধুরী এবার রাগে ক্ষ্যাপা, দঁড়ি ছেঁড়া ষাঁড়ের মতো। রাশেদ খানকে জোর করলেন ছেলে যেনো কবুল বলে। রাশেদ খান, নাবালক শিশুকে বোঝানোর মতো আদরে কথায় বাবা সোনা বলে, কবুল বলতে অনুরোধ করলেন। রনক নিজের দিক থেকে সে পূর্বের মতোই কঠিন, শক্ত। মুখে সে কবুল জাগবে না। বললো:
--" আমি ত বললাম, আমি মন থেকে কবিতাকে ভালোবাসি। এখানে কবুল বলার কি আছে। কবিতার মা বললেন:
--" বাবা, কবুল বললে ত তোমার কোনো ক্ষতি হচ্ছেনা। বললে কি হবে, বলো বাবা!
--" কবুল না বললে কি ক্ষতি হবে?"
কাজী সাহেব বললেন: কবুল হচ্ছে মুসলামদের বিয়ের চুক্তি। কবুল না বললে সে চুক্তি বৈধ, হালাল হবেনা। এটা স্বামী-স্ত্রী'কে একত্র করার, এক বঁন্ধনে আবদ্ধ করার ধর্মীয় আজ্ঞা, যা চুক্তিকে সাক্ষাত সাক্ষরিত করে।
---" আমি যদি কবুল বলে বিয়ে করে পরে কবিতাকে ডিবোর্স দেই, না মেনে নেই তাহলে এ কবুল কি করতে পারবে? এ কবুল কি আমার মনকে, সংসারকে ধরে রাখতে পারবে?"
--" তা নয়। তুমি বুঝতেছোনা, কবুল ছাড়া বিয়ে হবেনা।
--" কেন হবেনা, আমি কথা দিচ্ছি জীবনে কখনো কবিতাকে ডিবোর্স দেবার কথা বলবোনা। কথা দিচ্ছি, এ জীবনে কবিতা শুধু আমার। আমি ওর সারাজীবনের ভার নিলাম। মন থেকে আমি ওরে চাই।
কাজী কবিতাকে প্রশ্ন করলেন: মা তুমি তাকে কি ভালোবাসো?"
---" জ্বী বাসি।
--" তাকে তুমি কবুল বলতে বলো মা, প্লিজ!
কবিতা রনকের দিকে মুখ তাক করতেই রনক বললো:
--" কবিতা, আমি ত তোমাকে ভালোবাসি,ছাড়বোনা কখনো। তুমি কি ছাড়বে?"
--"না, কখনোও না।"
--- "দেখলেন ত কাজী সাহেব, আমরা একে অপরকে কখনোও ছাড়বোনা। এটাই মেনে নেন। আমাদের যেতে দেন, আমরা আমাদের সংসার গোছাই।
জহির চৌধুরী কপালের ঘাম মুঁছে বললেন:
--" কবুল না বললে তোমার সাথে আমার মেয়ে যাবেনা। আমি আজই অন্য ছেলের সাথে বিয়ে দেবো ওর।
--" কবিতা কি সে ছেলেকে মন দিতে পারবে, ভালোবাসবে মন থেকে। কবুল বললেই কি ওদের মধ্যে ভালোবাসা হয়ে যাবে, জিজ্ঞেস করেন?"
--"এতো শতো বুঝিনা, তুমি কবুল বলবা কিনা?"না বললে যাও আমি আমার মেয়ের বিয়ে অন্য ছেলের সাথে দিবো। তোমার মতো ধর্মাদ্রোহী নাস্তিকের সাথে নয়।
--"আমি যদি মন থেকে খোদাকে না মেনে পাঁচওয়াক্ত নামায লোক দেখানোর জন্য আদায় করি, তাতে কি খোদা নামায কবুল করবেন, আমার নামায আদায় হবে?"
কাজী সাহেব জবাবে বললেন:
--"না হবেনা। মন থেকে খোদার নাম না নিলে কিছুই হবেনা।"
--" আমি যদি মনে শয়তানি রেখে খোদা ডাকি, সে কি আমার ডাকে খুশি হবে?"
--"না।
---"কেনো, আমি ত তাকে খোদা বলেই ডাকছি?"
--"খোদা বলে ডাকলেও, মনটাই এখানে আসোল ডাক। যে ডাকের কোন নকল নেই, লোভ দেখানোর উপরিপাওনা নেই। "
--"তার মানে, মনের ডাকই আসল ডাক, পূজা -তাইতো?"
--"হ্যাঁ,তাই।
--"তাহলে সমস্যা কিসের। আমি ত কবিতাকে মন থেকে স্ত্রীর স্বীকারুক্তি দিচ্ছি, মন থেকে ভালোবাসার পূজা দিচ্ছি। কবুল বলে লোক দেখানো লোভের দরকার কি?"
---" আপনার বল্লে কি হবে, বলেন না। এতো ঝামেলা করছেন কেনো?"
--"ঝামেলা আমি না। আপনারা করছেন। আচ্ছা আপনি ত মকবুল কাজী।আপনার প্রথম স্ত্রী ত কবুল বলেই বিয়ে করেছিলেন, তা অন্যের হাত ধরে চলে গেলেন কেনো আপনার সংসার ছেড়ে?"
--" তার সাথে অন্যের ভাব ভালোবাসা ছিলো, তাই চলে গেছে।"
--" কেন,কবুল বলে ত বিয়ে করলেন, ছয়মাস একসাথেও থাকলেন, ত সংসার টিকলো না কেন?"
---" বললাম ত, সে আমাকে ভালোবাসতো না। তার মন অন্য মনে ডুবে ছিলো।
---"তার মানে মনের সংসার কবুল দিয়ে হয়না, তাই ত?"
কাজী সাহেবের মুখটি লজ্জ্বার চোরাবালি গর্তে লুকিয়ে গেলো। লজ্জ্বায় বাকরুদ্ধ, জবাব! বিয়েতে আসা আত্মীয়দের, গেস্টদের মধ্যে অনেকেই চলে গেলেন। যে বিয়ের সমাধান দিতে আসেনি, যার আসা শুধু দাওয়াতের দর্শক তারা সবাই বিনোদন না পেয়ে চলে গেছে। জহির চৌধুরীর আয়োজিত হলে এমন বিয়োজিত দর্শকের আসন দেখতে পাওয়ায় শারমিন সুলতানা পঙ্গু পাখীর মতো শরীর ছেড়ে দিলেন। হাত পা পরিতিক্ত কাগজের মতো চেয়ারে পড়ে আছে। দমটা হা-হুতাশ! কবিতা ভাবনার সাগরে স্নান করছে সেই প্রথম থেকেই। কপালের ঘাম বেনারসির অনেকাংশ ভিজিয়ে দিয়েছে।চোখের কাজল জলের কালি! রনকের মা বাবারও একই অবস্থা। সন্মানের গোদি ছেড়ে ঘাসের উপরে বসে আছেন। কাজী সাহেব নিজের সন্মানটুকু গুটিয়ে জহির চৌধুরীর মুখের দিকে তাকালেন ফেরার পথে। জহির চৌধুরীর মাথা মাটির দিকে হেলে দিলেন। মনে হচ্ছে, সন্মান চুরি করে ধরা পরেছে, সন্মান চোরা! রনক কবিতার দিকে নিষ্পলক দৃষ্টিতে মুহূর্ত কয়েক তাকিয়ে থাকলো। কবিতার চোখে যে জল খেলতেছিলো নিয়তির খেলা, তা যেনো রোমিও জুলিয়েটও কবিতার জলে সঙ্গ দিতে সহকারি। বেদনার চোখ যে মহাকালকেও থমকে দেয়, নির্বাক করে তুলে তার গতী। বিশ্বযুদ্ধের অধিক যে মনের যুদ্ধের শোক বেশি,ট্রাজেডি তার ভালোবাসার!! জহির চৌধুরীর সব ইস্তফা দিলেন অন্ধকার আকাশ পথ থেকে চোখ নামিয়ে। হাত দিয়ে চোখের জল মুঁছে কয়েকটা দির্ঘশ্বাস নিলেন। স্ত্রী,শারমিন সুলতানাকে কাঁদা স্বরেই জাগিয়ে তুললেন। বললেন:
--"ভ্যাগের পরিহাস... কি করবে বলো। অতঃপর,কবিতাকে বললেন, চল রে মা আমার কপালে তোর সুখ দেখা ছিলোনা। তাই এমন.. আমাকে ক্ষমা করিস মা,তোর ভালোবাসা তোর অহংকার করতে পারলাম না...
কবিতা কোন কথা না বলে সোনালী রঙের পা দুটি বাবার দিকে এগিয়ে দিলো। রনক আর কোন যুক্তির দাবী মনের অধিকার জানান দিলো না। কয়েকঘন্টার ব্যবধানে বাহারিত সাজে রঙিন বাসা একেবারে জনশূণ্য। যারা বর্তমানে আছে তারা সবাই রঙের কারিগর। রনক তার পরিবারসহ কেবল জীবনের রঙ বিসর্জন দিয়ে সামনের দিকে আগাচ্ছে, পিছনে রেখে মন!! কবিতাও আগাচ্ছে মনের টান দূরত্ব রেখে। কিছুদূর অতিক্রম করার পর রনক ঘুরে দাঁড়ালো। কবিতার মাকে উদ্দেশ্য করে বললো:
--" মা..... আপনার বাবার নাম ত বিনয় চ্যাটার্জী ছিলো তাই না?" আর আপনার বোনের নাম মিতু চ্যাটার্জী?" একবার খোঁজ নিয়ে দেখবেন, আপনার বোনের ছেলে কেনো আজ মুসলীম ঘরে।আপনার মতোই মুসলমান হয়েছে! মা আমি ত জাতের খেলা, আপনার মতোই। জলে করলাম জন্ম সাধন, জীবন সাধন পানি বলায়। মা, জল আর পানির ফাঁরাকটা কোথায়?" মানব ধর্ম কি এমনই এক বিবর্ণ আয়োজন,মন তার কর্ম নয়? সব মানবেই মন থাকলে -খোদা,দেবতা ঈশ্বর এক নয়? মা - আমি ত মনের ধর্ম পালন করেছিলাম, মন পূজা। আমি ত আমার রক্তের মা আর দুধ মাকে আলাদা করিনি। মা ত মাই, জাত কিসের। মা আপনিও ত হিন্দু ছিলেন, দেখেন ত কবিতার রক্তে হিন্দু লেখা আছে কিনা, ওর মনটা আধৌ কোন কোষ কিনা যা আমাদের থেকে ভিন্ন কোষে গড়া,দেখা যায়, ভিন্ন জাতের উপকরন!? আসি মা-কবিতাকে ভাল রাখবেন, নিজেরাও ভালো থাকবেন..
কথাগুলো শুনা মাত্রই এমন এক চোখের পর্দা আলেয়া হলো জহির চৌধুরী,শারমিন সুলতানা আর কবিতার যেনো- একটু আগে যা ঘটেছিলো তা কেবল সংক্ষেপ ছিলো, এখন তার রচনা খালাস পেলো। কবিতার লাল বেনারসির আঁচলটি দিয়ে মা শারমিন সুলতানা নিজের মুখের অযাচিত ঘাম মুঁছে নিলেন। মেয়ের মুখের ঘামও মুঁছলো সেই আঁচলে। দুই জাতের হতাশার ঘাম অদ্ভুত একই,জলঙর! কবিতার মুখের দিকে তাকিয়ে জহির চৌধুরী ডান ঠোঁটের গোড়ায় টোপ কেটে অস্বাভাবিক একটি হাসি দিলেন নিঃশব্দ। কবিতা পরক্ষণে বকের মতো ঘাড় ঘুরিয়ে চিৎকার করে বললো:
--"রনক.. ওরফে রনক চ্যাটার্জী.. আই লাভ ইউ.... এই ইরেসপোন্সিবল ছেলে, এই রেসপোন্সিবল মনটা তোমার...

অতঃপর, রাশেদ খান স্ত্রী আর ছেলের হাত ধরে আগাতে লাগলো মন আর মানব বুকের মোলাকাতটা স্ব-স্পর্শে গাঢ় করতে। অনুভূতি যার -মনের মানুষ সব এক চোখের!


সাগর ইসলাম







হরকরা প্রকাশনা 
ফেইসবুক পেইজ- https://www.facebook.com/horkoraprokashon
যোগাযোগ- ভিক্টোরিয়া রোড, টাঙ্গাইল ১৯০০ (প্রধান অফিস)
ফোন- 01301012096
ই-মেইল: horkoraprokashon@gmail,com


Post a Comment

Previous Post Next Post