আদিত্য আনামের কবিতা ‘মহাদেব’
আদিত্য আনাম
মহাদেব
আদিত্য আনাম
ওঁম নমঃ নমঃ শিবায়ঃ নমঃ
ওঁম নমঃ নমঃ শিবায়ঃ নমঃ
ধার্য করো কৃপা ধারণী সম
ওঁম নমঃ নমঃ শিবায়ঃ নমঃ
তুমি কাল—মহাকাল—শিব
তুমি আদি, অন্ত, জড় ও জীব
রুক্ষ বক্ষে ঢালো করুণা-জল
দয়া-দরিয়ার না আছে তল
না আছে পাছে হারাবার ছল
বিনাশ ও বিকাশে একাকার
তুমিই—নিরাকারের সাকার
আকারে অঙ্কিত অমানিশা
আলো-নিগূঢ়-প্রকাশ ও দিশা
সহসা সংযত-উদ্যত-ধীর
ধ্বংসে ধীমানে নিটল স্থির।।
হে আশুতোষ ক্ষমা করো দোষ
আছে যত ক্ষত, অহম ও রোষ
তোমার হৃদয়ের নির্মল আঁচে
দেবতা অসুর সমস্তই বাঁচে
হীন, দীন যত যাবতীয় ঋণী।।
ওঁম নমঃ নমঃ শিবায়ঃ নমঃ
ওঁম নমঃ নমঃ শিবায়ঃ নমঃ
অসম্ভবের খুব কাছাকাছি
সম্ভবে শব হয়ে শুয়ে আছি
প্রণয় হে, নির্ণয় করো প্রেম
বাসনা-বক এইত উড়ালেম
স্বয়ংয়ে স্বয়ং ভস্ম করে নমঃ
ধ্বনিতে, শেষ থেকে হও প্রথম
ব্যর্থ তুমি; তুমিই সফল ওহে
বিনাশ, শ্বাস ফুটাও শব-দেহে।।
অহেতুক ভুল ওড়ে হুলস্থুল
ভয়ে-সংশয়ে হয়ে নির্কূল
ক্ষীণ প্রাণ বুঝি পালিয়ে যায়
দেহ-দেহান্তর অনন্যোপায়
একখানা মন নিযুত হারে
ভেঙে চৌচির নিয়তি-প্রহারে
দিকে দিকে দিক ফিকে দুর্দিক
বেদনাবিদ্ধ ভীষণ আশিক
ফিক তুলে কাঁদে স্নিগ্ধ শিশির
কাটে না কখনো কলঙ্ক-ভীড়
শত অবতার হয়ে ছাড়খার
যদি যায় তবে কিসের বাহার
থাকে আর বলো পরাক্রমে
ওঁম নমঃ নমঃ শিবায়ঃ নমঃ
ধার্য করো কৃপা ধারণী সম।।
বিশ্বাসে শ্বাস অবরুদ্ধ বাস
হুল হয়ে ফোটে নির্বাণে নাশ
সর্বনাশের বার্তা বাতাসে ভরা
জটিল জরায় জীবিত মরা
মৃতের মন্ত্রে মিথ্যে উপদেশ
ধেয়ে আসে বিকারগস্ত হয়ে
শত লাজ-লজ্জার মাথা খেয়ে
খেই হারিয়ে হেরে গিয়ে তাও
দাঁড়িয়ে দৃশ্যের পৃষ্ঠে উধাও
করে দিয়ে মুখোমুখি এইত
ক্ষত ও ক্ষতি হৃদয় সমেত
মরে যেতে যেতে বেঁচে আছি
লোভ নয় নিজের কাছাকাছি।।
ওঁম নমঃ নমঃ শিবায়ঃ নমঃ
ধার্য করো কৃপা ধরণী সম।।