পনু প্রান্তিকের কবিতা
বিষফুল; তোমাকে ভালোবেসে ছিলাম বলে...
বিষফুল; তোমাকে ভালোবেসেছিলাম বলে শরীরে রাত নামে...
অকাল বোধনে হয়ে উঠেছি ক্লান্ত, দিনশেষে নষ্ট।
আমার ইচ্ছে করে তোমাকে খুন করে খুনি হই
তোমাকে ভালোবেসেছিলাম, বেঈমান বিষফুল।
তোমাকে ভালোবেসে এখন আমি মৃত সমুদ্র সফেন,
জরাজীর্ণ, সবকিছু উল্টাপাল্টা
আমি তোমাকে হারাইনি
আমি তোমাকে হারিয়ে, আমি আমাকে খুঁজে পাইনি।
আমি তোমাকে ভালোবেসেছিলাম, বেঈমান বিষফুল।
বহুদিনের নষ্ট স্মৃতি আমাকে নষ্ট করে তুলেছে
ভুল সংসারে ডুবে থাকি।
যে’দিন তোমায় আস্ত শরীরে খুঁজে পাবো
জরায়ু ছিঁড়ে আস্ত শরীর গিলে খাবো।
বুকের ভেতর ছিনছিন করে ব্যথা ওঠে,
কঠিন যন্ত্রনায় রাত গিলে খাই, বুকের ভেতর বেঈমান রক্তবমি
বিষফুল; আমি তোমাকে নিয়ে এমন সব কবিতা লিখবো
যেনো তোমার সংসার ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে যায়,
এইযে কারণে অকারণে তোমার মিথ্যে অভিশাপ নিয়ে ঘুরি।
এখন আমি এড়াতেও পারিনা, বইতেও পারি না।
১৬/১১/২০১৮
খাদরা
কবিতা যেআমাকে প্রেমিক হতে দেয়নি...
আমার কপাটে জমাটবদ্ধ হয় তোমার প্রেম আলাপ...
আমার এককোটি দীর্ঘশ্বাস তোমার কাছে ঋণী ।
এসো, আমাকে আলিঙ্গন করো...
এবং ডুবিয়ে দাও তোমার দীর্ঘশ্বাসের ভেতর,
বিষাদ আমাকে ঠকিয়ে বেশিদূর এগুতে পারেনি।
আমিও বুঝিয়ে দিয়েছি
আমি বিষাদের বয়স জানি, দৈর্ঘ্য জানি...
দিনশেষে পরিসীমা জানি, প্রস্থ জানি...
এক কোটি দীর্ঘশ্বাসের ভেতর টকটকিয়ে বসে আছি।
যতটুকু সম্ভব দুই—কোটি, তিন—কোটি, চার—কোটি...
আমি লাফিয়ে চলা বিষাদ, তরুণ, স্বেচ্ছাবন্দী
আমার বুকের ভেতর তোমাকেই পুড়িয়ে মারি
আমি মিথ্যে প্রেমালাপ, কালোকোটের জবানবন্দী।
এসো, আমাকে আলিঙ্গন করো
এবং ডুবিয়ে দাও তোমার দীর্ঘশ্বাসের ভেতর,
তা না হলে গিলে খাবো পৃথিবীর জটিল নিয়ম...
বক্তৃতা শুনবে?
আমি বলে দেবো তোমার নামে যা তা...
তুমি আমার বিকট পথের রক্তবমি
তুমি আমার ক্যান্সার, তুমি আমার শশ্মান
তুমি আমার যন্ত্রণাদায়ক টিউমার,
তুমি আমার খুনি...
আমার কপাটে জমাটবদ্ধ হয় তোমার প্রেম আলাপ...
আমার এক কোটি দীর্ঘশ্বাস তোমার কাছে ঋণী।
ভয় নেই প্রিয়তমা, আমি প্রেমের ইতিহাস জানি...
আমি ভুল পথের গন্তব্য পটিয়ে শুদ্ধ হতে জানি,
কোথায় পাবে এমন প্রেমিক?
আমি মুখোমুখি তোমায় বুকের বা—পাশে নিয়ে হাঁটি...
এসো, আমাকে আলিঙ্গন করো
এবং ডুবিয়ে দাও তোমার দীর্ঘশ্বাসের ভেতর,
তা না হলে গিলে খাবো পৃথিবীর সমাজ নিয়ম অলি—গলি...
বক্তৃতা শুনবে?
আমি বলে দেবো তোমার নামে যা—তা...
তুমি আমার বিশৃঙ্খল ছুরিকাঘাত, তুমি আমার মিথ্যে—নারী
তুমি আমার সস্তা গাঁজার কলি,
তুমি আমার মদের হাড়ি, ঘরে দাবী।
তুমি আমার খুনি...
বক্তৃতা শুনবে?
আমি বলে দেবো তোমার নামে যা—তা...
তুমি আমার লাশের মিছিল, বুকের বা—পাশে রক্ত ব্যান্ডেজ
তুমি আমার পুরুষতান্ত্রিক দাবী,
তুমি আমার দুঃখাহত,
তুমি আমার দুঃসংবাদ,
তুমি আমার মহামারী
তুমি আমার অর্ধমৃত লাশের খুনি
তুমি আমার খুনি
আমার এক কোটি দীর্ঘশ্বাস তোমার কাছে ঋণী।
এসো, আমাকে আলিঙ্গন করো
এবং ডুবিয়ে দাও তোমার দীর্ঘশ্বাসের ভেতর।
সিলেট
১৩/০২/২০১৬
প্রেমিকার বিষাদে এককোটি বছর যাবৎ জ্বলছি...
কেবলই আমি বিষাদের প্রেমিক, প্রেমিকার বিষাদের
ফাঁপা ঢেউয়ের চাপা সুরে বিদিশার মতো কাঁদে
চারদিকে অন্ধকার, মুখোমুখি শকুন বধূর নিঃশ্বাস
ফেলে আসা দিনগুলো ভয়নক ভয়ে বাসা বাঁধে।
ভেতরের নদী রোজ রাতে মাতালের মতো করে উল্লাস,
যে আমাকে ভালোবেসেছিলো, সেও ভুলে বেঁধেছে সংসার।
এখন আমার বুকের ভেতর বিষাদের আগুন দাউদাউ করে জ্বলে,
কেবলি জ্বলে, ভেতর পুড়ে জ্বলে।
জ্বলে জ্বলে প্রেমিকার নামে নিচ্ছে নিঃশ্বাস...
আমার পাশ কেটে রোজ কতকিছু চলে যায়
নিবু নিবু আলো জ্বালিয়ে জোনাকির দেহ উড়ে বন।
গত ক’দিন হলো ব্যাটালিয়নের মস্ত গাড়িটা পাশ কেটে চলে গেলো
দ্যাখো, দ্যাখো এই তো পাশ কেটে চলে গেলো
লালবাতি জ্বালিয়ে ফায়ার সার্ভিসের সন্ধ্যা রাতের গাড়িটা,
কোথাও কি আগুন লেগেছে, এই ভেবে
আমি যে আহত শরীর।
আমার বুকের ভেতর
দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে,
প্রেমিকার বিষাদে এককোটি বছর যাবৎ জ্বলছি।
অথচ লালবাতির হর্ণ সার্ভিস টের পেলো না...
এখন শুধু ঝাঁপসা চোখের বারান্দায় দীর্ঘশ^াস—ই ওড়ে,
কেবল আমি পুড়ে পুড়ে ধোঁয়া হই পোড়া আকাশ ঘুরে...
সুনামগঞ্জ
০৯/০১/২০১৩