যমুনা এক্সপ্রেস কুত্রাপি সংখ্যা
পর্ব-০১
দ্রাবিড় সৈকত
কুত্রাপি
১।
পড়া যাক কুত্রাপি
ধরা যাক নবতর সূত্রের সলতে
টলতে টলতে আসো রাস্তায় রাত হলে বাতচিত হবে
বলতে পারি না কেনো কুম্ভীর
চলতে শাড়ি না চেনো ঘুম বীর
জেগে দেখো পৃথিবীর পোয়াতি পরাণে নামে সন্ধ্যা
মন্দা বাজারে নয় মনের খোয়াব
ধনের ছোয়াব যত বিলি কর বেশুমার বাথানে
কাঁথা নে, মুড়ি দিয়ে মুয়ে থাক, এই পথ না পারিলে দলতে...
২।
কবিতা সহজ হলে ভাল, তরল হলে আহা উঁহুঁ শিৎকারে ভরে যায় ডালা
গরল থলে যাহা রেখেছেন কোলের ভিতর তাহারে নামিয়ে দেখেন কতখানি জমে Ñগেছে গাদ/
জামদানি কমে বেচে দাঁদ হতে পারে তার প্ররোচনা গিলে
দাম জানি নেমে যাবে জনপ্রিয়তার
খাম খানি ছোট হবে, নাম যশ হাততালি কালিঝুলি মেখে দেবে পদবির পাখনার Ñনিচে/
ডাল মাখনার পিছে ছুটে যারা হয়রান তারে বলি সোনাচান
সোনাধান গোলায় তোলার কিছুতো খাটুনি আছে, একেবারে ফাঁকতালে আর Ñকতো পাবো?/
ভাবোÑমগজ ঘুরিয়ে দেখো পৃথিবীর সুগন্ধী সুধার আছে বহু রূপভেদ
সন্ধি ক্ষুধার সাথে গোলমাল হয়ে গেলে সৃজন খামারে দাও জং ধরা মস্তক তালা।
৩।
মর্মজ্ঞানীর আছে চিৎকার বিকৃতি দুস্থ ভাতার
ধর্মযোনীর আছে শীৎকার আকৃতি সুস্থ পাতার
যা তাহার নয়, তারেই বিকাশে রাখে কৌম কোলাহল কৃতকাম ছলে
Ñমৃত ভাম গড়ায়ে কাঁদে নিরাপদ/
ধীরাপদ বোঝে না কেহ, ক্ষয়ে গেলে সুকতলি সুড়সুড়ি লাগার ভেদে প্রান্তিক Ñশিকারের প্রিয়/
আসিও সকালে সময় হলে অথবা দুপুরে যদিবা তারো পরে বিকেলে সন্ধ্যায় রাতে Ñভোরের দিকে/
বাসিও অকালে ভালো
ঢালো যতখানি শাস্ত্র ও সমাজের আক্রোশ, তার ধার আছে
চার আছে জনতা ধরার দিয়ে টোপ
ছোপ ছোপ দাগ শুধু চাবুকের, মানুষের পিঠে আর মিঠে কথার কিছু জোড়াতালি Ñগরম তাতার/
৪।
তুমি যারে ফলো করো তার দাম বেশি
তুমি যারে হেলা করো তার নাম দেশি
কার কামে কোন জনা লাগে, কোন ফণা কোথায় লুকিয়ে আছে বিষের বোতল
কিসের অতল খেঁাজ?
আত্মায় রাখো দুই চোখ
ভাত তায় ছুটে যাবে?
ঘুটে কুড়ানির মতো পৃথিবীর গোবর থেকে যতটুকু পাও
তাও কেমন শান্তি মনে আহা
নাও বাতাসের দিকে বাইতে পারে আন্ধাও
ধান্ধা ও ধড়িবাজের সাথে আপোশে আহত ভাব মরতে মরতে যাবে বেঁচে
কেঁচে গণ্ডূষ বলে বাঙলায়, তার কথা পাঠ করো বিনাশের আগেই তুলে চান্দা।
৫।
আয়নাকে বসিয়ে রেখে এলাচের ঝোল খাওয়া চলে না
বায়নাকে নামাতে লাগে যৌগিক সিঁড়ি
বউ ফিক করে হেসে যদি ওঠে, তারে কি বেলাজা বলো?
যে তাজা তার বিশুদ্ধ দাপট
কে রাজা যার নিষিদ্ধ শকট
বিকট চেহারায় ঘোলাটে গল্পের একতাল নীরবতা মাখা চশমার কাঁচে
নেক ছাল উঠে গেলে পাপের বিন্যাসে ভাসে ডোরাকাটা সন্তাপ
চোরাহাঁটা বন তাপ ছাপিয়ে দিলে পিছুটান
কিছু চাঁন একলাই আকাশের পেন্সিলে আঁকে প্রাগৈতিহাসিক সব জানোয়ার —‘Ñটেরাকোটা।’/
৬।
মানুষ পড়তে গেলে লেগে যাবে গোল
মানুষ ধরতে গেলে ভাগে পাবে খোল
ঢোল বয়াতিরা ভাবে গানে গানে হায় বিশুদ্ধি হবে বিতরণ
কি বুদ্ধি তোরে আজ ভিখারির মতো করে ঘোরায় গোড়ায়
পোড়ায় আগায় যারা ব্রয়লার মুরগির সিনা
জয় তার, তাহাদের বাহির বাড়িতে বারফট্টাই করে এ যে আত্মরতির ভাঙে মধু
যদু মিয়া
বধূ বিয়া করিলেই হয়, নতুবা তাহারে বলে স্বপ্ন সিনানের দোষ
কিনানের ভাইপো হলে পাগলেও হয় কিছু সুখী
বুজরুকি ভাবনারে বলো থাম্
আমাদের কাম আছে, আছে কিনা? নাকি আতরের গল্পেই বেহেস্তি বেহুঁশ!
৭।
চামচারা কাম ছাড়া বসে থাকে মনিবের পায়ে
নাম ছাড়া ফুটানোর কিছু নেই, লিচু নেই, আম নেই বন্দুক বিচি নেই
সিন্দুক সমুচার, কমু তার নাম?
বাম ডান হড়কায় ভড়কায় অকারণে অপারগ কর্ম ও কুশলের ক্রান্তি
ধর্ম ও দূষণের জান্তিও জলসার কানকথা কৈছালি কোঁকড়ানো পালিশের লুঙ্গি
মালিশের সঙ্গী আছে, তালি ঢের দিতে পারে, হাতের চামড়াগুলো কুঁচকানো
পাতের কিনারে থাকে নানান পদের তেল শিশি ভরা
নিশি কড়া হলে তার চকচক করে চোখ
অসুখ, ছেঁচড়া লোভের তলে চাপা পড়ে হয়ে গেছে সুকঠিন চাটুকার
হাঁটু তার ক্ষমতার বিষ্ঠায় গেঁথে আছে, কাঁচা গন্ধের গুলজার গুরুপাক
অবাক? হবেন না জনাব! এরাই আপনার চারপাশে, ভৃত্য ও ভেউড়া নয় সহচর Ñসহচরী নিত্যদিনের ভাবসঙ্গী।/
৮।
বলিতে চেয়েছি কিছু অতীতের—ভবিষ্যতের সুলুক
থলিতে পেয়েছি লিচু
নীচু হয়ে ভোগ করা যায়, একাকী
যে পাখি বোবা; বিশেষত বিস্কুট খেতে চায় রোজ
দিস ঠেঁাট তার দিকে, শিষ দেয়ার মতো মৌলিক গোলাকার ভাবে
আখরোট আখেরাতে পেলে আদমিরা গলে যাবে এই সূত্রে
চাক—জোট, যা ফেরাতে গেলে
ডেরাতে ঢেলে দেবে পয়জন প্রলোভন পাজামার মুলা
না জানার ধুলা কিছু কেটে যদি যায়
বেটে ও বামনে নেই ভেদ
যা মনে আসে তাই যদি ঠিক হয় আমার বলার কিছু নেই; চলুক।
৯।
ফাঁকিজুঁকি জেনে গেলে গন্ধম খেয়ে ফেলো পুরোটাই
আঁকিবুকি ড্রেনে ফেলে নন্দন ছেয়ে গেলো বুড়ো টাই
শুরু চাই স্পষ্ট প্রভাতের পিপাসায়
বিপাশায় ঝলকালে রোদ
পলকা বোধের করো আয়োজন আসবাবে আসুরিক আধাসিদ্ধ
গাধা ঋদ্ধ হলেই যাবে কি ঘোড়ার মতন তারে দেখা?
তোড়ার পতন হয়
ছোরার যতন হলে সভ্যতা বলি
নব্য তামাকের ধেঁায়ায় উড়ে উড়ে ভুলে গেছি অভিপ্রেত আদরের গোড়াটাই।
১০।
হয় না, এতো লুকোছাপা এতো প্রাণহীন
কয় না, কতো ফুকো চাপা, কতো মানহীন পবনের পাঠ
লবণের ঠাট মাঠে ধুয়ে রাখি চিনিদের আলমিরা মুখে
বাল ছিড়া সুখে ঘুরি আহা আকাশের আউলিয়া
বাউলিয়া ভেক বাতুল বামুন
থামুন
চুনে পানে সব নয় সুপারি জর্দার আছে ঘোরাবার জোর
ছোরা বার করে ভয় দেখাতে পারে শিশু শান্তভাবের
ভ্রান্ত খাবের থেকে দমিত দুনিয়ায় এসে দেখে নিন অজ গ্রাম ছাল তোলা মাঠ।
যতন কুমার দেবনাথ
কুত্রাপি
১।
ধান ভানো শিবের সঙ্গীতে
বসে থাক
বাঁক লয় ডুঙ্গির ওপাশে
হাসে হাসুক
ভাসুক না ভাঙা ঘর চাঁন্দের আলোয়
ভলোয় ভালোয় কেটে পড়
ঝড়কে ঝাড়ু মেরে
হেঁড়ে গলে দে হার পড়িয়ে
গড়িয়ে চড়িয়ে হোক গান
ধান ভানো শিবের সঙ্গীতে।
২।
কৃষ্ণ অভিসারে
কোটে যাচো ধান্দা কি তোর
ঘোর! এদিকে ফিরে
ধীরে, যাবু নাকি যাত্রাপালায়
ছালায় বাঁধিয়া বোঝা কাঁধে
রাধে, কৃষ্ণ অভিসারে
কবি যারে কাউয়ার মুন
পুন করিতে নিশ্চিত
বিহিত— টিহিত হোক জ্ঞানের সন্ধান
কোন দান করিবে কিঞ্চিৎ।
৩।
গরু মেরে জুতো দান
গরু মেরে জুতো দান
থুথু খান কাদা পুঁজ ঘেঁটে
বেঁটে বর বাউল সম্রাট
খাট বেচে মাথাগুঁজে কাদার ভেতর
ইতর কী সাধে বলি
অলিগলি বেশ্যার দল
জল ঘোলা করে খায় গাধা
আদার বেপারি হয়ে জাহাজের খোঁজ
বোঝ এখন বোঝ।
৪।
আহা বেশ
কান্দোচিন হালুবালু করে
খালু বালুচরে, খোদার জমিন
কমিন না, এটা কেচু কও
হও দীর্ঘজীবী শিখণ্ডী কাক
ডাক তোর চ্যালারা কোথায়
ঘুতায় ঘুতাক শিং দিয়ে
ছিÑ এ কী বলিশ বাঞ্চোত
ধান জোত জমিদারি শেষ
বেশ আহা! বেশ।
হেনরী স্বপন
কুত্রাপি
১।
নাওয়ের বৈডা—লগি
নাও বাইতে লাগদে একখান হুন্দইর কাডের বৈডা
নাইয়র আইতে ময়ূরপঙ্খির সোন্দর ছিলো ছৈডা।
হুগনার কালে চরের চোরাবালিতে
বাজতে বড়বড় নাও
গয়না মালইর হক্কল নায়ে থাকতে বাঁশের লগিডাও।
পানসি কোষা তালডোঙা আরও কতো নামে
মাঝি মল্লার এহোন কি আর লাগে কোনো কামে।
ভড বডাইয়া চলে এহোন নাও অইচে টলার
বৈডা লগি ছাড়াই নাওয়ের ইঞ্জিন আছে চলার।
আইলোডি চাষ উইড্ডা গেছে টিলারমেশিন পাইয়া
মাঝি—মল্লা নাও হরাইছে ইঞ্জিন টলার আইয়া।
২।
উন্দুরে কাডে ধানের ছড়া
হোঙের কোলায় পাকাধান খায় মোগো গাইতে
উন্দুরে নেয় ধানের ছড়া কাডে পেত্তেক রাইতে।
হেই কোলার ধান কাইড্ডা আনতে বিডার গোলায়
বদলা আইতে কইছে মেভাই,
হেরা থাহে ভোলায়।
গাদায় গাদায় অদের মোহে উন্দুর কাডা মাডি
অদ খোঁচলে দেখা যায় ধানের ছড়া ম্যালাডি।
ধান দাইতে নামছে কোলায় কাডে ধানের খাবলা
বাড়ির ডাঙর পোলায় আনছে পান্তা এক গাবলা।
আল কাডাইয়া কাঁচি আনছে সঙ্গে কোদাল খোন্তা
বদলারা খায় কোলায় বইয়া পান্তা মরিচ নোনতা।
হাসনাইন হীরা
কুত্রাপি
১।
সম্পর্কের বাড়ি
ছায়া খুলে দাঁড়াতে হবে
মায়া ভেঙে যেতে হবে সম্পর্কের বাড়ি,
বেদনার এমন হাঁড়ি ভেঙে তাড়ি ফেলার মানে হয়?
সংসারি পাখিরা তাই
যে যার ঘরে সেলাই করে মন
নদীবন পেরুলেই যোগের আসন পেতে বসে
সেখানে
বসনে না টিকলে শাসনেও বৈরাগী থাকে
ডেকে ডেকে একথা
কে কাকে বোঝায়?
বুঝপাতা না গজালে তেজপাতায় ভাজতে হয় বিদায়ের কড়াই।
২।
তুলনা
ক’য়ের আকারে খয়ের খা হয় না
জানো তো, পেখম না ছড়ালে
বায়না ধরলেও তোমাকে
তুই তোকারিতে নেওয়া যায় না।
পিছনে হায়েনা আছে
তারও পিছে আছে সামাজিক অজগর
ধরধর, হর হর বলে
মজগে ঢেউ তোলা আর
অফলায় ফলা রাখা একই কথা,
যথামথা ব্যথার বন্দনা করে তাই
হৃদয়ের তুলনা হৃদয় দিয়ে হয় না।
৩।
নির্জন খাঁচার গান
ঢালুতে না হোক, তালুতেও না থাক
দিল খোলা বন্দরে এসে
ছড়িয়ে দাও জিলাসি পরাগ।
তল্লাটজুড়ে
পাতা ও পাহাড়ের ভিড়ে
তীর ছুড়ে বসো, হাসো
নিজেকে উহ্য রেখে ভালোবাসো নিজেকেই।
বাতাস আর কতটুকু উড়াবে সুবাস
সবই তো হৃদয় নিবাস,
হলাহল উপেক্ষা করে তাই
সমহার বন্দনায় থাকে নির্জন খাঁচার গান।
৪।
তুমি ছাড়া কমন কিছু নেই
এই বলে চিনি না তোমাকে!
সোমাকে তা পন করে বলে দিয়েছি,
পেয়েছি কি পাইনি
সে কথা লেখা হয়নি, বলাও হয়নি।
কি ঠেকা হুদাহুদি এই বিষে থাকা!
সে কথা আর কতবার কই?
তুমি ছাড়া কমন কিছু নেই
তুমি ছাড়া বাজাবে কে পিয়ানোজমিন?
ধরনেই বরণ চিনেছি
নামান্তরে কে চায় তার অন্তর গহন!
কে গো চায় পাখি! সন্তের সনাতনী পীড়ন।
৫।
পরানের মতো বাজে
পুদিনা পাতার সদাচারি প্রেম
হেরেম ছাপিয়ে ওঠে বুকের মাচায়।
খাচায় পুষে রাখা পাখি
ফিরে ফিরে চায়।
কোথায় তার বাড়ি, হাঁড়ি ভাঙা ঘাট?
মৌতানে ছুটে আসে চৈতনী হাসি
বৃন্দাবনের ব্রতচারী বাঁশি
পরানের মতো বাজে
সাজের পাকসাট কিংবা পুলসিরাত
পাক বা না পাক এ হৃদয়
সুখের ছুরি শানায় বেদনার ডানহাত।
৬।
সন্বন্ধের সূচক
সোজা সোজা হাঁট
না হলে খাট হয়ে যাবে পথ
না হলে মার খাবে অথৈ’য়ের,
শপথের দড়ি ছিঁড়ে পরে যাবে ছিটকে
করবেটা কি ?
ধরবে কোন পিরিতের ভান?
মনীষার ধান খাড়া করে ফলাও
বড় ছোট যাই হোক
শোকের জমিনে বসাও চিত্তের ড্যাস,
মূসক হ্রাস পাওয়ার আগেই
বেড়ে যাবে সম্বন্ধের শতকোটি সূচক।
আদিত্য আনাম
কুত্রাপি
১।
অন্ধ কারে বাঁধবে বলো সখী?
অন্ধকারে সাধবে ছলো আঁখি?
আমি যে জোনাক
তুমি যে নাগ
সন্ধি—কি প্রকারে হবে, এই দ্বন্দ্ব ভরা ভবে?
বন্দী বিধাতা বিলাপ করে বক্ষে
বধির তুমি অধির হয়ে ছুটছ, তাই—
অযথায় দোলে দেয়ালে আঁকা দোয়েল
মৌন—বিষাদে গৌণ—বিস্বাদে বিস্ময় কারাবন্দী।
২।
মূর্খ খোয়ারে থাকো বন্ধি
দূর্গ জোয়ারে আঁকো ফন্দি
শরীরে তোমার মুখোশ জড়ানো
চোখের গহীনে টলমলে ঘুম
ধূম, লেগেছে ঝলমলে ধোকার
কে কার বলো প্রতারক সমাজে?
বোকার স্বভাব বাড়ে শুধু ধূধূ ভাব নিয়ে
এই বোধহীন বৈরী অভাবে ক্ষয়ে যায় তোমার অনাগত বোধ।
ক্রোধ ক্ষীণ হয়ে হয়ে
ভয়ে ভয়ে ভয়াবহ
নিভে যাচ্ছে তোমার মানবিক জ্যোতি।
৩।
চুন থেকে পানে
ঘুণ ছেকে ঘ্রাণে
নিজেকে রোপণ করি বিমুগ্ধ চরাচরে,
খরা—ঝড়ে খোঁসে গেছে পাতারা
মাতারা ঘুমদোষে বিনিয়োগ হয়েছে মনে।
আমি ধূমায়িত পীড়নে জ্বলি প্রাচীন ব্যারামে
অথচ, গোপনে ছায়ার আড়ালে এক অন্ধ—শালিক
বৃক্ষহীন মগজে খুঁজি পারদগাছ,
যারা, সূক্ষ্ম ঋণ গগজে ওড়ে চিকন ধূলায়।
৪।
তোমার কামচোখের রাগে
বৈরাগে ঘামশোক জ্বলে
উঠোনে মরূভূমি হেঁটে যায় দূর
ক্রুর ভুলে চেটে খায় তরল উত্তাপ।
মেঘরঙা যৌবনে তুমি যতীহীন সুখ
ঢেউ তুলে রটাও শুধু সোনালী রোদ্দুর
সমুদ্দুর ছাপিয়ে ওঠে ঠোঁটের ঈশানে।
নিশানে আমি অভিভূত
থামি সহিশুদ্ধ তরলে আমি ডুব—সাঁতার কেটে।
৫।
সত্য সহজ তবু ভীতু
ওৎ তো পেতে থাকে মিথ্যুক কান
মান তার যায় না, আসে
নৌকা ভাসে আমাদের নদীগামী ভাবনা জুড়ে
খুঁড়ে শোক ও চোখের ক্যানভাস,
অরণ্য বিশ্বাস ভরা মন
মনে বরণ্য নিঃশ্বাস ভরা বন
উজার হয়ে যায় বিভৎস্ব ডাকে
নিবিষ্ট বাকে তার বিবর্ণ ঢেউ।
৬।
কিতাবে লেখা নেই
কি তবে দেখা সেই ফল?
জান্তে, একান্তে
ভাঙছে কি মনোবলের গলি?
আসো তবে সেই কথা বলি
শোনো, হৃদয়টা আগলে
খ্যাতি এক বোকাফল
ইতিহাসের বাগানে যাকে খেয়ে শান্ত হয়
পাগল ও ছাগলে!
জবা রায়
কুত্রাপি
১।
হৃদয় ভাঙলে নাকি তাকে বসতে দিতে হয়
কষতে যেতে কয় হিসেবের কিছু কথা
অযথা আনলক করেছি মন
তার অনাথা যাপন
ক্ষণ গুনে ভেবেছি ফিচার খুলে বলবো বাঁকাচোরা কিছু কথা
বন গুণে জনে জনে জপনায় নন্দ নাতিনের দোষ
ফোস ফোস ফাঁকতালে জলবানুকে বলে কেবল বিনিদ্র রাত
যে বল বিহঙ্গগীতির বেসামাল বোঝাপড়া
সোজাপাড়া গেলে খোলাখুলি মেলে তার ছল আর পুরাতন নীতিকথা
২
সুগন্ধির রাত নিয়ে খুলেছি ময়দান
কয় দান হলে যুদ্ধের হবে শেষ?
বুদ্ধের যবে কেশ খোলা রোদ দেখেছি
শুদ্ধের নেশা বিকিয়ে দিয়েছে রুচি রেডিমেড রেডিওর পাকে
সিকিয়ে নিয়েছে সব জরুরি ঠিকানা
নিশানা তার নগরের ফটকে রাখা ঘুম
জঠরের আটকে থাকা সোম করে মঙ্গল সাজাবার চেষ্টা
তেষ্টা মেটানোর পর আর কি চাই
ফি পাই যদি ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে
কে শয়ে মাইল বেগে চলা ক্ষতের আঘাত?
৩।
ও হে শোন
ফিনফিন করা যাতনার যাতাকল
পাতা ছল শেষ হলে বল
বিকেলের নাস্তায় নেই কেন আবেগ অনিশ্চিতির অনুকম্পা?
সেকেলের রাস্তায় হেঁটেছি বহুকাল
পেতেছি ছায়াজাল আঁকা প্রাচীন মাতৃকা চিহ্ন চায়ের চিতাভস্ম
ভিন্ন হলেও এখানে আছে ঠোকাঠোকা গোধূলির রঙ
বোকাসোকা পা—ধূলির সঙ করিসনে এতো
বলিসনে বদলা নিতে নিতে হয়েছি হিংস্র
যটলা ফ্রিতে ফ্রিতে বাঁধেনি জানিস
সাধিনি বালিশ বলে আর কতবার গুঁজে নিবে সূচকের মুখ, মেকি আঁতাফল?