বই আলোচনা - জ্যোৎস্নাপথের হলুদ মিনার -কবি- মাহবুবা করিম
আলোচনায়: Anif Rubed
কবি মাহবুবা করিমের কবিতার বই 'জ্যোৎস্নাপথের হলুদ মিনার' পড়লাম।
যে-কোনো কাজেরই একটাই দাবি, স্বকীয়তা, যদি তা সৃষ্টিধর্মী কাজ হয়। মাহবুবা করিমের কবিতায় তার স্বাক্ষর পেলাম।
তার ভেতরের অপূর্ব শক্তি টের পাওয়া যায় বেশিরভাগ কবিতাতেই। তার বলার ভঙ্গিমা তীব্রতর তীরের মতো। বলার ভেতর কোনো আড়ষ্টতা বা জড়তা বা সন্দেহভাব রাখেন না তিনি।
যেমন,
'তুমি হাসলেই ঘাতকের বিষমাখা ছুরি খসে পড়ে হাত থেকে'
[তোমার হাসি এতো নিঃষ্পাপ কেন]
অথবা,
'আমি সেই জান্নাতকে ঘৃণা করি যে অনন্ত উৎসবে তুমি নেই ;
[স্বর্গের দিকে যাচ্ছি না ]
নিজের দর্শনের সাথে হাজার হাজার বছর আগের মিথকে চমৎকারভাবে মিলিয়ে দেবার এবং তাতে শক্তিবল ঢুকিয়ে দেবার ক্ষমতা তার চমৎকার।
যেমন,
'পুরুষেরা বেপরোয়া মাছি হয়ে গেছে। চির অন্ধ হয়ে যাক। ইতিপূর্বে যেমন অহংকারে অভিশপ্ত জ্বীন জাতি।'
[মেয়ে তুমি উঠে আসো নূহের কিস্তিতে ]
প্রেমপ্রকাশে কবিতাগুলো একেবারে অকপট এবং তীব্র। 'অরণ্যকে' সিরিজের কবিতাগুলো তার প্রমাণ।
বাবাকে বিষয় করেও অনেকগুলো কবিতা রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম 'বাবা সিরিজ'। কিন্তু বাবাকে নিয়ে লেখা একটা স্বতন্ত্র কবিতা 'শূন্যতা' সকল পাঠককে গভীরভাবে স্পর্শ করবে বলে আমার মনে হয়।
পরিপূর্ণভাবে ভালো লেগেছে আরো কটি কবিতা এর মধ্যে রয়েছে 'টেলিস্কোপ কেবলই আকাশ দেখে', 'মৃত্যু নেই এইরূপ জন্ম দাও', 'ঈশ্বরজন্মা পুরুষ'।
মোটমাট বলতে গেলে তার কবিতা বেশ উপভোগ্য। কাব্যমদ জুটে যায় সহজেই।
বানান বিভ্রাট রয়ে গেছে কিছু কিছু যদিও।
কবি মাহবুবা করিম এর জন্য ভালোবাসা, শুভেচ্ছা। এবার, তারই আরো একটি বাক্য শেষে দেব। বাক্যটি প্রথম উদ্ধৃত কবিতারই শেষ বাক্য।
'বলো ধর্ম নাকি প্রেম-আমি কার পায়ে মাথা নত হবো?
Tags
বুক রিভিউ