যমুনা এক্সপ্রেস কুত্রাপি সংখ্যা
পর্ব-০৪
সুজালো যশ
কুত্রাপি
১।
তোর মননে ঢুকে গেছে আপেলের বাসা
চাষা বালিশ হারিয়ে
ঝাঁকে ঝাঁকে যাই মাকড়শা পাড়া
খাড়াই তাস তাস করে মরে যাস
বুঝে উঠার আগে নানান কৌশলে
ফসলে তোমার শ্যামলী মা
ওহে স্বজনা
ভজনা করে দেখো
হরপ্পার পুঁতে রাখা রচনা
২।
কার শ্লোক মুখস্থ করে কি বোঝাও বেবোধ
এখনো বোধ না হলে তোরা ইকারুসের স্রোতে মরবি
আর সোজা পায়ে ধরবি
খারাপের দিন ঘনিয়ে এলে আকাশের তারা গুনে গুনে
বুক চাপড়ায় মাটি খুঁজবি
তখনিই অন্ধকারের তলায়
পঁচে পঁচে অশ্বত্থামার সঙ্গী হবি
গেইট খোলা আছে হামাগুড়ির ছন্দে
তোর মন মন্দ হলে ও ঘরে ফিরে আয় বেকুব।
জুয়েল কলিন্দ
কুত্রাপি
১।
যাপিত জীবন
কষ্ট কত আর ধরা যায়?
নষ্ট এক জীবনের জালে!
তালে তালে দিনকে দিন বাড়ছে
ঋণ। প্রতিদিন সকালে
ঘুম ভেঙ্গে উঠি খুনসুটি কোরে
মরে যায় মানুষ অকালে।
কপালে আছে যা, তা—ই হবে এ—ই ভাবে
কাটাচ্ছি দিন বাড়াচ্ছি ঋণ।
মানি আর না মানি যাপিত জীবনখানি
এ ভাবেই প্রতিক্ষণ
মুহূর্তে স্ফূর্তে ক্ষয়ে যাচ্ছে।
২।
কঞ্চিসুদ্ধ বাঁশ
মন্দ যত আছে এ পৃথিবীতে
দ্বন্দ শত ভালোর তারই সাথে
প্রাতে ও রাতে মাঘ থেকে পৌষ
হয় না আপোষ এদের মাঝে
তবু সকাল, বিকাল, সাঁঝে
কিছু বাজে লোক আছে সমাজের মাঝে;
দ্বিধা আর দ্বন্দে
ভালো আর মন্দে
ঘটিয়ে মিশেল নিজেদের স্বার্থে,
অর্থে অনর্থে করে সমাজের সর্বনাশ।
যত কঞ্চিসুদ্ধ বাঁশ দিয়ে এদের সোজা করা দরকার।
৩।
একান্ত
ঘৃণা তুমি কারে করো মানুষ?
বিনা দ্বিধায় ওড়াও রঙ্গিন ফানুস!
অথচ প্রতিটি মনের দুয়ারে দাঁড়িয়ে
দেখেছি ভেতরের অভাব, ঐশ্বর্য,
কৌমার্যের আগুন, যৌবনের ফাগুন
ক্রোধের অনলে পুড়ে হয়েছে ছাই।
হায়; পাপ, তাপ, কষ্টের অভিশাপ,
হিংসা—দ্বেষ, অভিমানের রেশ
ধুয়ে যাবে সব একদিন অশ্রম্নবানে।
বামে কিংবা ডানে সামনে—পেছনে
রবে না কেউ আর একান্ত তোমার।
তাপস দে শান্তনু
কুত্রাপি
১।
মধু
যদ্যপি গুরু মোর
যায় শুড়িবাড়ি,
তথাপি মুখে তার নীতির ফুলঝুড়ি
শিষ্য নিঃস্ব হয়,
বিশ্বতার শষ্যেক্ষেত্র,
নেত্র তার বুকের ভাজে ভাসে।
আমাদের হয়না উর্বর যৌবন,
মৌবনে তার নতুন মৌমাছি আসে।
গুরু খায় হানিটাস পাব্লিক ফুলের পাছা চোষে।
২।
মোটিভেশন
মোটিভেশন শেখালো, কোরোনা শোক
যা হবার হোক।
যে যাবার যাবে সে যুদ্ধের ময়দানে,
কিম্বা রেমিট্যান্সবহুল প্রবাসে।
মানুষ হুদাই মহান ক্ষুধাই হলো পাপ,
জাহানে যত মহান ধনী বাদবাকি অভিশাপ।
ঘারের উপ্রে ঘরের কিস্তি,
মোটিভেশন কেবল মনের প্রলেপ,
দুই টাকার নোটের উপর দশটাকার খাপ।
৩।
অনুনয় অনুরোধ
প্রস্তাবনায় জন্মায় না কুত্রাপি।
নপুংশক বেয়াদব, অকর্মণ্য অলস
বেকার চিত্ত লাগে, হে ব্যস্ত নাগরিক।
তোমাদের ক্রমাগত হর্ণের তালে তালে
বাড়ে জিডিপির প্রবৃদ্ধি।
আমরা সারেঙ্গি বাজিয়ে গান গাই—
“মূলাক্ষ্যাত কারেঙ্গে”।
কুত্রাপি ম্যাসেঞ্জারে অলেখা চিঠির মতো
আড়মোড়া ভাঙ্গে।
সুনয়ন পাত্র
কুত্রাপি
১।
অগোচরে আর্তনাদ জমিয়ে বধূ
কাঠ চুলোয় রেঁধে যান অমৃত ব্যঞ্জন
ধোঁয়া বেয়ে উড়ে যায় সমস্ত ক্লেশ
হাওয়া এসে লড়ে যায় আগুনের সাথে
উত্তাপ লাগে তার মুখে আর বুকে
শৌখিন হাতে তার ব্যঞ্জন রেডি
নিভিয়ে আগুন সে পাতে বাড়ে ভাত
সকলে টেনে নেয় নিজের নিজের
বেলা শেষে তার কাছে উচ্ছিষ্ট দুই দানা মধু
সাগর ইসলাম
কুত্রাপি
১।
দশজন মানুষ আর তার জিপার একটি
দুইটি চোখ উত্তেজনার মেঘপিয়ানো ডাকে অবাক।
হতবাক, রক্তের ভেতর সবুজ নদী যে নারীর
বাড়ির বোরখা ছিঁড়ে গেলে খোলে লাল শরীর,
দেয়াল—ঘেরা চোখ নিয়ে কুকুরাঙ্গের প্রপোজ
আপোষে না হলে হেয়াল জাওড়া বাজায়
ইজ্জতের সাহস; লাগা খেল
নন্দির তেল
শরীর পিছলে গেলে ভগবান হয় টাকার রেল
মেল বনাব ফিমেল—রাজনীতিও
একটা কথার ব্লাউজ খোলা রাতের সেলফ।
২।
তোমার সৌন্দর্য মাপেনি যে মুদ্রা
তার মুদ্রাদোষ আমার জুতা কিম্বা পা
নেয়নি কোন পথ, রথ তবুও, সভ্যতার
অপার সেফটিপিন খুলে দিয়ে এগিয়ে
প্রভু নামে বিয়ের ইভটিজিং তোমার কপাল মানে।
ঘামে — আমার ইজ্জত আর রক্ত যায় তক্তের গানে!
পেরেশানে কে জানেÑখোদার পশম মানে প্রেম?
মগজের জের টেনে ধোঁয়ার পৃথিবীতে ইলমের ট্রেন
মিস করে হেলেন কথার হ্যাবেন;
সুরের কিচেন জ্বলে যায়, গলে যায়, নিরুপায়
জলাশয় সংসার প্রেমহীন জলে সিঁদুরও মুছে যায়Ñ হায়!
আব্দুল্লাহ সাহারাজ
কুত্রাপি
১।
লাশ
দুগ্ধপায়ী শিশু বড় হয়ে সুদ খায়!
মুগ্ধতায় যিশু আলোতে যায়...
হায়! তবুও তো কেউ ফিরে পায়
মা’য় যেভাবে পথ দেখায় মাটির
খাঁটির ভেতর হযবর তার ঘাঁটির
শুদ্ধতা মাথা উঠাতে গিয়ে দেখে
লেখে কেউ একজন পাহাড় পাপ
মাফ পাবেনা ভেবে ছাড়লেন শ্বাস
বাঁশ অপেক্ষায় মানুষেরা হবে লাশ
২।
ইশারা
শাহাতাদ আঙুলে যে ইশারা লেগে আছে
যাহা রাত, পা ভুলে গেছে বশ্যতার কাছে!
সাক্ষী নীরব বিপ্লবের দিন!
কাক কী ভুলেছে বসন্ত ঋণ?
যতোই জ্বালো ভুল—ফুল কালো!
হালের জলের বুদবুদ বলের খেলা,
কালের আকাশে ঠিক শেষ হবে মেলা।
ক্ষীণ আয়ুর দিনে কিনে আদি ইশারাÑ
লিখি; উড়বে... পাখি... উড়বেই...
৩।
বিস্ময় মানুষ!
আমি কে? কী আমার পরিচয়?
জানি আস্তে আস্তে
দামি নাকি কমদামী
পানিতে বাঁচতে বাঁচতে ফুল হলাম
গোলাম আমি তারপর দেখি
সেকি! বিস্ময় কেবল সৃষ্টি এক!
সমস্ত সৌন্দর্য ঢেলে তার ইচ্ছে মতো ফুঁকে বানালেন!
নামালেন পৃথিবীর এই গ্রহে
রুহের জগতেও নতজানু ছিলাম
দিলাম ¯্রষ্টার ইবাদতে কপল লুটে
ফুটে সমর্পণে মসগুল এই আমি মানুষ হলাম!