কফিনের ফিলোসোফি ও অন্যান্য কবিতা: আকরাম শুভ

কফিনের ফিলোসোফি ও অন্যান্য কবিতা: আকরাম শুভ







বিষন্ন প্যাসেজে গোলাপের কাঁটা


ঘুমহীন কোন রাত হতে পারে
চোখে অজস্র কৃষ্ণচূড়া মৃত্যুর মত,
প্লাটনিক ছাই বোঝ?
ফু দিয়ে উড়িয়েছি বহুকাল হলো_
হৃদয়ে সার্চ দিয়ে দেখো
তবু কারো নাম লেখা নাই।
ক্ষণিক শিহরণে হতে পারো বিলীন
প্রিয় কোন অজগর গেঁথেই নিতে পারো খোপাঁয়!
তবু হাসিমুখে খুঁজে পাবে নিষ্ঠুর বিষাদ,
তোমার ঠোঁটের রক্ত দিয়ে আর কি করবো _
যেখানে সঞ্চিত এককোটি রাত হারাই
নিঃশ্বাসের বিষাক্ত ছোবলে!



গোপন প্রিয়া


তোমাকে লেখা যায়
এইসব কুয়াশার দিনেও _
হঠাৎ ফাল্গুনী রোদের পৃষ্ঠায়,
আমার চোখের অক্ষরে
নিয়তির কোটরে।




মরুভূমি ইতিহাস



কাম এলে ধৈর্য কে প্রেয়সী করো
নারী তো চুম্বন _
অতৃপ্ত মরু
সময়ের মরিচীকা....
ভাবছি বুকে ক্যাকটাস চাষ করবো _
এইসব হিম কুয়াশা কেটে গেলে
কোন এক বসন্তে এসো ,
খোঁপায় গুঁজে দেব নীল কামিনী
প্রেমিকের উত্তপ্ত রক্ত!



ভুলে পাওয়া তোমাকে


এইসব ভুলে থাকা দিনেই
নিখোঁজ হয় প্রেমিক
সাদা গোলাপ হাতে,
কাক পিয়নের ঠোটে
দিয়ে যায় বিষাদছেড়া চিরকুট!
যদিও পুরনো প্রাসাদ বলে কিছু _
আমাদের ছিলো না কোনদিন
এই পৃথিবীতে
তুমি
আমি
কেবল ঘোর চোখে শিল্প দেখি
পাঠ করি সাদাকালো বৃত্তান্ত,
রুপকথা ঘুড়ে আসি
রঙিন আক্ষেপে
তবু ভুলে যাই _
ভুলে যাওয়া শূন্য
শূন্য থেকে তুমি হও
আমি হই
শূন্য হয়.......
ত্রিয়সী
তবু হঠাৎ
মনে পড়ে গেলে _
শাড়ীর কৃষ্ণচূড়া পাড়ে
ভুল করে রক্তে মেখে নিও ;
এমন হিম কিছু গল্প পড়ে নিও
আকাশের ধূসর পৃষ্ঠা থেকে ।




আকাশভোলা দিনের কথা


একটা রাজ্য ছিলো রাজপথ হীন
মেঘে মেঘে নীল শৈশবের,
দড়িছেঁড়া সময়ের একটা গ্রাম _
সারা বানুর উঠোনে
গেরুয়া রংয়ের সন্ধ্যা ;
জোস্নায় আকাঁ গোল্লাছুটের স্কেচ ছিলো একটা,
অনেক বৃষ্টিদিনের গল্প
রুপকথা তে ভরা,
আর আমার বোনের হাতে
ছিলো একটা শরৎচন্দ্রের উপন্যাস !



কফিনের ফিলোসোফি


মানুষ মূলত ঈশ্বরের মত!
ঈশ্বর একা বলেই _
মানুষকে একাকিত্বের যন্ত্রণা দেয়।
ঈশ্বরেরও কষ্ট আছে
মানুষ দেওয়া কষ্ট,
আছে অনন্ত সুখও স্পষ্ট ;
ঈশ্বরের রাগ আছে ভীষণ দ্রোহ
পুড়িয়ে ছাড়ে অনন্ত গ্রহ
আকাশজোড়া শত নক্ষত্র ।
ঈশ্বরের ও একা লাগে
বন্ধু হওয়ার ইচ্ছে করে _
ইচ্ছে করে ভালোবাসতে,
সুখে দুঃখে পাশে থাকতে।
ভীষণ ব্যাথায় শান্তি দিতে
ঈশ্বরেরও ইচ্ছে করে ;
মানুষেরও অন্য এক মানুষ আছে
তারই নাম ঈশ্বর!
মানব জনম শূন্য হলে
শূণ্যে পাবে তাকে ।



Post a Comment

Previous Post Next Post