সাক্ষাতকার/ আলোচনা পর্ব (০২)/ অতিথি: কবি- রিগ্যান এসকান্দার/ হরকরা প্রকাশন

 

সাক্ষাতকার/ আলোচনা পর্ব (০২)
অতিথি:
কবি- রিগ্যান এসকান্দার



(১)প্রশ্ন: সাগর ইসলাম:  কবি কেমন আছেন? কোনো ফরমালিটি দিয়ে শুরু না করে চাচ্ছি আপনাকে কিছু প্রশ্ন করতে। প্রথমেই জানতে চাচ্ছি আপনার মুক্তচিন্তা ও গবেষণামূলক সাহিত্য পত্রিকা ‘চর্চায়ন’ ও ‘দর্পন’ সম্পর্কে। এ বিষয়ে যদি বিস্তারিত বলতেন!

উত্তর: রিগ্যান এসকান্দার: এই তো আছি। চলছে। ভালো-মন্দ মিশিয়েই।

'দর্পণ' একটি পত্রিকা। এই পত্রিকাটি মূল সম্পাদক আমি নই। আমি এই পত্রিকাটির উপদেষ্টা এবং সেই সাথে এই পত্রিকাটির কবিতা বিভাগটি আমি দেখি। মানে আমাকে এই পত্রিকাটির কবিতাবিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

আর 'চর্চায়ন' বিষয়টিকে অল্প কথায় বলতে গেলে বলতে হয় চর্চায়ন হলো আমার কাছে একটি দর্শনের নাম। শুধু আমি নই, আমাদের চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলে অসংখ্য তরুণ লেখক ও কবি এই দর্শনটি ধারণ করি। এর শুরুটি করেছিলাম আমরাই। আদর্শগত দিক থেকে এটি সাম্যবাদী দর্শন। কিন্তু এটি দার্শনিক জ্যা পল সার্ত্রের থটকে ক্যারি করে। জ্যা পল সার্ত্রে মার্ক্সের দর্শনকে অস্বীকার করেননি। তবে বলা যায়, মার্ক্সের দর্শনকে মেনে নিয়ে তিনি তা বর্ধিত করেছেন। সার্ত্রের মতে, 'বৈপ্লবিক দর্শন হলো অতিক্রমের দর্শন, স্বাধীনতার দর্শন'। আমরা এ বক্তব্যকে বিশ্বাস করি।  'বিশ্বে নির্দিষ্ট কিছু কর্তব্য ও মূল্য ( মান) আছে যা প্রদত্ত ', ভাববাদের এ শিক্ষা যেমন বিপ্লবকে ঠেকায়, ঠিক তেমনি ' মানুষের পরিবেশ অতিক্রমের ক্ষমতা নেই' জড়বাদের এ নিয়ন্ত্রণবাদী শিক্ষাও বিপ্লবকে ঠেকায়, ব্যক্তি স্বাধীনতার বিরুদ্ধে দাঁড়ায়।  এ ক্ষেত্রে তাই চর্চায়নের দর্শন হলো মানুষের দর্শন, মানুষ জড় বস্তু নয়, চর্চায়ন বিশ্বাস করে মানুষের নিজস্ব সত্তা আছে, চেতনা আছে, এই সত্তা যেমন জড়বাদের মতো নিয়ন্ত্রিত নয়,  তেমনি ভাববাদের মতো পূর্ব নির্ধারিতও হয়। মানুষ তার সত্তা ও চেতনা কাজে লাগিয়ে যেকোনো পরিবর্তন আনতে পারে বা বর্তমানকে অতিক্রমের সক্ষমতা রাখে।

 

(২)প্রশ্ন: সাগর ইসলাম:   আপনার কবিতায় বরাবরই জনসাধারণের জীবনমুখী বিষয়ব¯দ প্রাধান্য পেতে দেখেছি। ফিলোসফিক্যাল টার্ন নিয়ে এমন ক্লাসিকাল কবিতা বিশেষত সকল শ্রেনীর পাঠক সোজা কথা সকলশ্রেনীর জনমতে পৌছাবার চূড়ান্ত সুন্দর কৌশল আপনার কবিতায় পাওয়া যায়। মূলত আপনার কবিতা যেন আমাদের চারপাশের জনসাধারণের জীবনের কথা। কীভাকে এতো সুন্দর করে তা কবিতার ভাষায় রূপে পরিপূর্ণতা আনেন আপনি বা আপনার এমন সুন্দর থ্রট চিন্তার উৎসই বা কোথায়?

 

উত্তর: রিগ্যান এসকান্দার: দেখুন, সোজা কথায়, আমার কাছে কবিতা হলো বোধের ব্যাপার। কবি মূলত বোধের জোগান দিচ্ছেন এই পৃথিবীতে। কবি হোলেন সৌন্দর্যের বিবরণকারী, এবং সত্যের ধারাভাষ্যকার। সুতরাং আমি কবিতা লেখার সময় এই তিনটি বিষয় মাথায় রাখি, তা হলো — বোধ, সৌন্দর্য যাকে কবিতার শিল্পগুণ বলা যায় এবং সেই সাথে সত্য। এই তিনটি বিষয় হয়তো আমার কবিতাকে জীবনমুখী ক্লাসিক করে তোলে। তবে বোধ ও সত্য বাদে শুধুই সৌন্দর্য তথা শিল্পের জন্য শিল্প, এ তথ্যে আমি বিশ্বাসী নই।

 

(৩)প্রশ্ন: সাগর ইসলাম: আপনি কতো বছর যাবৎ বাংলা সাহিত্যের সাথে আছেন? কবিতার পাশাপাশি আপনি কি গবেষণামূলক কোন কাজ করছেন বা সাহিত্যের অন্যান্য শাখা নিয়ে কাজ করছেন? ২০২৫ সালে অমর একুশে বই মেলায় আপনার কি ধরণের বই আমরা পাঠক মহলে পেতে পারি! আপনি কি একজন কবির পাশাপাশি মানুষ জীবন লিড করছেন নাকি মানুষ জীবনের পাশাপাশি কবি জীবন লিড করছেন?   

 

উত্তর: রিগ্যান এসকান্দার: একটি ছেলে। ফোর- ফাইবে পড়ে। তার তিনটি হাফপ্যান্ট। দুটির হাফপ্যান্টের রং আমার মনে নেই। একটি কথা মনে আছে। হলুদ হাফপ্যান্ট। এই হলুদ হাফপ্যান্ট পরা ছেলেটির হাতে একটি পাতলা দাগটানা বাংলা খাতা। ছেলেটি খাতাটির ওপর গোটা গোটা অক্ষরে লিখে রেখেছে — কবিতার খাতা। এখনো চোখ বন্ধ করলে সেই ছেলেটির চেহারাটা আমার চোখে ভাসে। সেই ছেলেটি আমি। এখন বলুন, আমি কীভাবে বলি, আমি কত বছর যাবত বাংলা সাহিত্যে আছি।

কবিতা বাদে আমার আর তেমন কিছুই করা হইনি এখোনো পর্যন্ত। গবেষণামূলক কাজ বলতে একটি আছে, তবে সেটি একাডেমিক কাজ, রবীন্দ্রনাথের কবিতায় মৃত্যুচিন্তা। এটি আমার মাস্টার্সের থিসিস ছিল। তবে আমার ইচ্ছে আছে গদ্যের দিকে হাত দেওয়া, যদি সময় ও সুযোগ পাই।

২০২৫ এর বইমেলায় আমার একটি প্রেমের কবিতার বই আসার সম্ভাবনা আছে। নাম — ' কবি উঠে চলে গেলে প্রেম উঠে চলে যায় '।

দারুণ প্রশ্ন। আমি মূলত মানুষ জীবনের পাশাপাশি কবি জীবন লিড করছি না। আবার কবি জীবনের পাশাপাশি মানুষ জীবন লিড করছি, তাও না। বরং বলা যায়, আমি কবি জীবনের পাশাপাশি মানব জীবন লিড করতে ব্যর্থ হচ্ছি।  

 

(৪) প্রশ্ন: সাগর ইসলাম: বর্তমান কবিরা একজন আরেকজনের মতবাদ নিয়ে নানারকম আলোচনা / সমালোচনায় ব্যস্ত। কখনো কখনো বা বেশির ভাগই দেখা যায় তারা সবসময়ই তাদের সৃষ্টি অর্থাৎ কবিতা বা বই নিয়ে আলোচনা/ সমালোচনা না করে ব্যক্তি আক্রমনই বেশি করেন, মূল যে বিষয়ে আলোচনা/সমালোচনা হওয়া দরকার তা না হয়ে হয়ে যায় ব্যক্তিগত বা দলগত আক্রমন- এসব বিষয় আপনি কীভাবে দেখেন এবং আপনার এসব বিষয়ে মতামত কি?

 

উত্তর: রিগ্যান এসকান্দার: দেখুন, সৃষ্টি - সৃষ্টি লড়াই যত না হবে, তার চেয়ে স্রষ্টা- স্রষ্টা বেশি হবে, এই সত্যকে আমি অস্বীকার করি না। এটা স্বাভাবিক; যত দিন স্রষ্টা জীবিত থাকেন। স্রষ্টা এক অসাধারণ জিনিস, তিনি নড়েচড়ে বসলেও একটু ভূমিকম্প হল। মৃত্যুর পর হিসেব আলাদা। তখন  বোঝাপড়াটি সৃষ্টি দিয়েই হয়। কারণ, স্রষ্টা তখন আর জীবিত নেই। এজন্য সৃষ্টি যেমন গুরুত্বপূর্ণ, স্রষ্টাও তেমন গুরুত্বপূর্ণ। সব নিয়েই কথা হবে। এমনকি কথা নিয়েও কথা হবে। শুধু সৃষ্টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে, এমন গৌতমবাদী নীতি চলে না, চললেও তা নিরামিষ মনে হয়। একজন লেখক বা কবিকে জীবন ও সৃষ্টি দুটোকে নিয়েই এগুতে হয়, সুতরাং কথাও দুটো নিয়ে হবে। এর মধ্যেই নায়ককে স্ট্যান্ড করতে হয়। ইতিহাসও তাই বলে। জীবিতকালে রবীন্দ্রনাথের আলোচনা - সমালোচনা - নিন্দা কম ছিল না। তাকে কী ক্ষতি হয়েছে রবীন্দ্রনাথের? 

 

(৫) প্রশ্ন: সাগর ইসলাম: আপনার একটি উক্তিমূলক বাক্য ‘কবি উঠে চলে গেলে প্রেম উঠে চলে যায়। এই বাক্যটিতে ব্যবহৃতপ্রেমশব্দটি কি আপনি সামগ্রিক অর্থে ব্যবহার করেছেন নাকি জিনেটিক সাইট থেকে? এই বাক্যেরই বা মূল ব্যাখ্যা আমরা কীভাবে পেতে পারি আপনার চিন্তাজগতে!

 

উত্তর: রিগ্যান এসকান্দার: 'কবি উঠে চলে গেলে প্রেম উঠে চলে যায় ' — আমার এ বাক্যে প্রেম শব্দটি সামগ্রিকই। শুরু তাই নয়, এখানে কবি শব্দটিও সামগ্রিক। কবি বলতে এখানে শুধু কবি বোঝানো হয়েছে, তা কিন্তু নয়, সমগ্র প্রেমিকদের প্রতিনিধিত্ব করছে 'কবি' শব্দটি।

 

(৬) প্রশ্ন: সাগর ইসলাম: ফ্যাসিস্ট সরকার পতনে ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্রদের যে ভূমিকা তা আপনি বর্তমান সময়ে কীভাবে দেখেন?

 

উত্তর: রিগ্যান এসকান্দার: প্রথমেই বলি, এই সরকারের পতন অনিবার্য ছিল।  এবং তা হয়েছেও। ছাত্র আন্দোলন বাদে এই সরকার পতনের আর কোনো অপশান ছিলো না। সবকিছুই সরকারের ভয় ও ভীতিতে তটস্থ ছিল। সরকারই এই পরিস্থিতি তৈরি করেছিল। এজন্য ছাত্রদের মধ্য থেকেই আন্দোলন বিস্ফোরিত হয়েছে এবং তা ছড়িয়ে গেছে।

 

(৭) প্রশ্ন: সাগর ইসলাম: বর্তমান তত্বাবধায়ক সরকার যেভাবে দায়িত্ব পালনে অগ্রসর হচ্ছেন তাতে বৈশ্বিত পৃথিবীর কোনো প্রভাব ভবিষ্যতে পড়বে কি পড়বে না- কি মনে হয় আপনার? দেশে বর্তমানে ছাত্রদের অবস্থান সব জায়গায় দেখা যাচ্ছে এসবের সুফল বা কুফলই বা আমরা সাধারণ জনগণ কতোটা ভোগ করতে পারি সামনের দিকে?

 

উত্তর: রিগ্যান এসকান্দার: বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার মাত্র কদিন হলো দায়িত্ব নিয়েছেন। তাদের সম্পর্কে বিচার বা মূল্যায়ন করার সময় এখনো আসেনি বলে আমি মনে করি। দেখা যাক। রাজনীতি এমন এক জায়গা যেখানে ভিলেনকে নয়ক আর নায়ককে ভিলেনের চরিত্রে ইতিহাসে অভিনয় করতে দেখা গেছে বহুবার। দেখা যাক কী হয়। তবে বলে রাখি, আমাদের নায়কের প্রয়োজন, ভিলেনের নয়। অভ্যুত্থান- পরবর্তী ছাত্রদের যে সকল সেক্টর উপস্থিত তার কারণ হলো, এখনো এই সরকারের প্রশাসনিক দিকটি দুর্বল। এটাকে সক্রিয় করতে হবে। রাষ্ট্রকে মেনে নেওয়া মানেই একটি কাঠামোকে মেনে নেওয়া। সুতরাং আপনাকে কাঠামোর ভেতর দিয়েই এগুতে হবে এবং এই কাঠামোর প্রত্যেকটা ইলিমেন্টকে সক্রিয় করতে হবে। যত দ্রুত তা সম্ভব, আমাদের দেশের জন্য তা ততো মঙ্গল।

 

(৮) প্রশ্ন: সাগর ইসলাম: যতো যাই হোক বর্তমান দেশের সামগ্রীক অবস্থা বিবেচনা করে দেখা যাচ্ছে যে আমরা বাংলাদেশী জনগণ সত্যিই একটি নেশায় বিভোর যে নেশার নাম ‘দেশপ্রেম। এই মহৎ গুনটি আমরা আদতে কীভাবে আমাদের জীবনে নিজেদের অগোচরে গ্রহণ করেছি ? আপনার কি মনে হয় এতে শুধু মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, শিক্ষা, রাজনীতি এসব বিষয়ে তৎপরতা আমাদের সবসময়ই বেশি ছিলো, নাকি আদতে আমরা সঠিক মানুষ হবার গুনাবলীর গুনেই গুনান্নিত?

 

উত্তর: রিগ্যান এসকান্দার: বাঙালি বরাবরই একটি দেশপ্রেমিক জাতি। এই দেশপ্রেম যে পড়াশোনা করে সৃষ্টি হয় তা নয়। একজন নিরক্ষর মানুষেরও প্রচন্ড দেশপ্রেম থাকতে পারে। কবি হিসেবে রাষ্ট্র আর দেশের সংজ্ঞা আমার কাছে এক নয়। আমি কখনো দেশের বিরুদ্ধে যেতে পারি না। কিন্তু রাষ্ট্র তথা কাঠামোর বিরুদ্ধে যেতে পারি, যদি এই কাঠামো জনগণের জন্য না হয়। একাত্তর-পরবর্তী এই কাঠামো আমাদের জণগণের জন্য তেমন সুফল বইয়ে আনিনি। সুতরাং কাঠামোর সংস্কার প্রয়োজন। বিগত পনের বছর তো মটেই নয়। অধিকাংশ জনগণ এই কাঠামো দ্বারা প্রতারিত হয়েছেন, বঞ্চিত হয়েছেন। সহজ কথায় বলতে পারি,  আপনি রাষ্ট্র দ্বারা যত প্রতারিত হবেন, আপনার দেশপ্রেম তত সক্রিয় হবে। যার প্রমাণ ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান।

 

(৯) প্রশ্ন: সাগর ইসলাম: কবি হয়ে ওঠায় শিল্পমান বেশি জরুরী নাকি কবিতা লেখাই বেশি জরুরী?

 

উত্তর: রিগ্যান এসকান্দার: কবিতা তো একটা শিল্পই। শিল্প ছাড়া কবিতা হয় কীভাবে? আবার কবিতা লেখাটাও জরুরি, কবিতায় যদি না লেখেন, শিল্পটাকে রাখবেন কোন কাঠামোর মধ্যে। মানে আমার ক্লিয়ার মেসেজ এই যে, কবিতা লেখার সময় সমাজ- বাস্তবতা- মানুষ থেকে বিমুখ হবে শুধু শিল্প নিয়ে বু্ঁদ হয়ে থাকবেন, তাহলে আমি আপনাকে শিল্পী বলি না।  কবিতাকে শিল্পিত রেখেই আপনাকে মানুষের তথা সমাজের জন্য পৃথিবীতে সুন্দরের আয়োজন করতে হবে। শিল্পের সাথে মানবিক সৌন্দর্যের এই যে কম্বিনেশন ঘটানোর দক্ষতা তবেই তো আপনি শিল্পী, তবেই তো আপনি কবি।

 

(১০) প্রশ্ন: সাগর ইসলাম: কবিতার উত্তরাধুনিক বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখেন, উত্তরাধুনিক বিষয়ইটিই বা কি- যদি বিস্তারিত বলতেন!

 

উত্তর: রিগ্যান এসকান্দার: উত্তরাধুনিক কবিতা মূলত সাহিত্য আন্দোলন।  শুধু কবিতাতেই নয়, শিল্পের অন্যান্য মাধ্যমেও উত্তরাধুনিক টার্মটির ব্যবকতা লক্ষ করা যায়। বিশ শতকের মাঝামাঝির এ আন্দোলনের প্রসার আমাদের বাংলা কবিতার গায়ে এসেও লাগে। দেখুন,  একটি আন্দোলনে অনেকগুলো ইজমের সমন্বয় থাকে। যেমন ফরাসি দাদাইজমের বৈশিষ্ট্যের সাথে উত্তরাধুনিকের বৈশিষ্ট্যের সদৃশ্য আছে। এ ধরনের কবিতায় ভাষা ও ফর্মে নতুনত্ব দেখা গেছে। কবিতায় ফর্মকে ভেঙে এন্টি ফর্ম তৈরি করা হয় এবং কবিতার নন্দনতত্ত্ব নিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হয়। অমীমাংসা ও নৈরাজ্যপ্রবণ হয়ে থাকে এ কবিতা। তবে উত্তরাধিকের নির্দিষ্ট  কোনো সংজ্ঞা দাঁড়ায় না; বৈশিষ্ট্য দেখে চিনে নিতে হয় আমাদের । সহজ কথায়, উত্তরাধুনিক বিষয়টি হলো অধুনিকতাবিরোধী একটি ব্যাপার।

 

আমাকে যদি বলেন, আপনি কবিতায় উত্তরাধুনিক বিষয়টি কীভাবে দেখেন, তাহলে আমি বলব, কবিতাকে আমি সব সময় ইজম বা আন্দোলনের বাইরে দাঁড়িয়ে ভাবি। কবিতার অবস্থান হওয়া চাই ইজম থেকে যতটা দূরে এবং হৃদয়ের ঠিক ততটাই  কাছাকাছি। কবিতা তো শেষমেষ পাখির ডাকের মতো শিল্প, হৃদয়তান্ত্রিক ব্যাপার-স্যাপার।

1 Comments

  1. খুব চমৎকার আলোচনা। আয়োজন অব্যহত থাকুক।

    ReplyDelete
Previous Post Next Post