সাক্ষাতকার/ অতিথি/ কবি ও ছড়াকার: অনীক রহমান বুলবুল
প্রশ্ন: সাগর ইসলাম: প্রথমেই শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা নিবেন। কেমন আছেন? প্রথমেই শুরু করতে চাই আপনার পেশাগতদিকের বাইরে আপনি যে সাহিত্যর সাথে আছেন তা কোন দিক বিবেচনা করে? শুধুই নিজের আনন্দে নাকি মানবিক বা রাষ্ট্রীয় কোন দায়বদ্ধতায়? যদি দায়বদ্ধতাই হয় তাহলে একজন লেখক বা সাহিত্যিকের লেখক জীবনে কোন বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়া উচিত বলে মনে করেন।
উত্তর: অনীক রহমান বুলবুল: শুভকামনা। ভালো আছি।সবসময় ভালো থাকার চেষ্টা করি সবাইকে নিয়েই। পেশা হলো জীবনের চাহিদা, বেঁচে থাকার অবলম্বন। আর লেখা হলো মনের জন্য , দেহ ও মনের পূর্ণ তৃপ্তির জন্য। আমি একজন মানুষ এই সমাজের । এই সমাজ, মানুষের প্রতি আমার কিছু দায়বদ্ধতা রয়েছে। এই দায়বোধ আমি করে আনন্দ অনুভূতির এক মায়াজাল। এই মায়াজাল ছিন্ন হবার নয়। রাষ্ট্রের দায়ের চাইতে আমার মধ্যে মানবিক বোধ বেশি কাজ করে । এই দায়বদ্ধতাই একজন লেখককে বা সাহিত্যিককে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়।
প্রশ্ন: সাগর ইসলাম: আপনাকে বারবার দেখা গেছে ব্যক্তি জীবনে আপনি খুব বিনয়ী এবং সত্য উদার মানুষ। এতোবড় একটা প্রোফেশনে থেকেও এমন ব্যক্তিত্বের অধিকার অর্জন করায় আপনার পারিবারিক ভূমিকা ও আপনার চিন্তার ভূমিকার যোগসূত্র কেমন? এসব ভূমিকার বাইরে একজন মানুষকে এমন ন্যায়নিষ্ট ও বিনয়ী হতে আপনার দৃষ্টিতে মানুষের কোন গুনাবলীটি সবচেয়ে গুরুত্ব বহন করে বলে আপনার মনে হয়?
উত্তর: অনীক রহমান বুলবুল: যে কোনো পেশায় থেকেও বিনয়ী হওয়া যায়। আমরা প্রত্যেকের প্রতিই যদি বিনয়ী ও উদার হই তাহলে সমাজের অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। ‘তুমি যেই হওনা কেন তোমাকে সবার আগে বিনয়ী হতে হবে’- এই বোধ আমার মধ্যে কাজ করে বলেই আমি সবাইকে সম্মান এবং মর্যাদার আসনে স্থান দিয়ে থাকি। আমার মনে হয় সামাজিক এই গুনটিই মানুষকে ন্যায়নিষ্ঠ ভাবে সমাজে ভূমিকা রাখতে পারে। এতে পারিবারিক ভূমিকার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিবার হলো সকল শিক্ষার সূতিকাগার, শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠ। সমাজে বিনয়ী একজন মানুষ গড়ে তোলার পেছনে পরিবারের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
প্রশ্ন: সাগর ইসলাম: আপনি মূলত ধরা চলে ছড়াকার। হাস্যরসাত্মক ভাবে দেশের নৈরাজ্য দুর্নীতি অপসাম্প্রদায়িকতার বিষয়ব¯‘ বারবার আপনার ছড়ার মূল উপজিব্য বিষয় হতে দেখেছি। প্রেম বা আত্মক্রোধের বাইরে এতোটা হুমকিমূলক সচেতনতায় নিজের লেখাতে প্রাধান্য দেবার সৎ সাহস কোথায় পেলেন এবং কিভাবেই বা তা ছড়ার মাধ্যমে সুন্দর বর্ণনা করতে সক্ষম হন- সেসব বিষয়ে যদি বলতেন!
উত্তর: অনীক রহমান বুলবুল: কবিতা লিখতে লিখতেই ছড়ার জগতে একদিন প্রবেশ হলো আমার। ছড়া লিখতে লিখতে মনে হলো সাহিত্যের এই শাখাটি চমৎকার। যা আমি কবিতায় সরাসরি বলতে বা বোঝাতে পারছিনা । যেখানে সরাসরি ব্যক্তি, গোষ্ঠীকে আঘাত করতে পারি ছড়ার মাধ্যমে। নৈরাজ্য , দূর্নীতি ও অসাম্প্রদায়িকতার বিষয়গুলো আমাকে দারুণভাবে নাড়া দেয়।আমার ছড়ার মধ্য দিয়ে তা প্রকাশ করার চেষ্টা করি। সাহস পাই আমার ভেতরকার চেতনা থেকেই। আমার জগতে তখন আমি হয়ে যাই সব ভয় ভীতির উর্ধ্বে । আমার মধ্যে কাজ করে মানবিক চেতনা ও মূল্যবোধ। অনেকেই ভয় দেখায় অথবা শকুনের দৃষ্টি যে আমার ওপর পড়েনি এমনটা নয়। ঐ যে বললাম রাষ্ট্র নিজেই যখন স্বৈরাচারী আচরণ করে তখন আমার চেতনায় কাজ করে মানুষ ও মানবিকতা ।
একজন মানুষ, গোষ্ঠী অথবা বিশ্বজনীন মানবতা যখন যেখানে বিপন্ন হয় আমি মনে করি ঠিক ঐখানেই আমার অবস্থান। আমি হয়ে যাই নির্যাতিতদের একজন। আমার ভেতরে তখন শক্তি ও সাহস কাজ করে।আর তারই প্রকাশ ঐ ছড়ার মাধ্যমে। কখনো সরাসরি কখনো ব্যঙ্গাত্মক ভাবে ছড়া দিয়ে খোঁচা দেবার চেষ্টা করেই যাবো আজন্মকাল।
প্রশ্ন: সাগর ইসলাম: বর্তমানে ছড়া সাহিত্যর চর্চা বাংলা সাহিত্যে কমে গেছে বললেই চলে। অথচ এই ছড়া সাহিত্য বাংলা সাহিত্যের আদি সম্পদই বলা যায়। বাংলা ভাষাবাসীর এই ছড়া লেখার প্রতি অমননশীলতা গাঢ় হবার কি কারণ থাকতে পারে? এছাড়া আপনার কি মনে হয় শুধু শব্দের অন্তমিল বা ছন্দ মিল রেখেই ছড়া হয় এর বাইরে ছড়া লেখা হয়ে উঠতে পারে না?
উত্তর: অনীক রহমান বুলবুল: ছড়া বাংলা সাহিত্যের আদি সম্পদ। প্রতি উপমায় কথার সাথে কথা মিলিয়ে তাৎক্ষণিক ভাবে কত ছড়া সৃষ্টি হয়েছে। আনন্দে বিষাদে, প্রকৃতির ঋতু বৈচিত্রের লীলাভূমি বাংলাদেশে কতভাবেই না ছড়া সৃষ্টি হয়েছে।কখনো আন্দোলন সংগ্রামে এই ছড়াগুলিই প্রতিবাদের ভাষা হয়ে উঠেছে। শুধু ছন্দের অন্তমিল হলেই একটি ছড়া হয়ে যাবে একথা বলার সুযোগ নেই। ছড়ার আঙ্গিক , ধরণ , উপস্থাপনায় বৈচিত্র এসেছে। সেইসঙ্গে প্রকাশভঙিরও দ্যোতনা বেড়েছে। বিদ্রুপের ছড়া, আক্রমনের ছড়া , প্রতিবাদের ছড়া, জাগরণের ছড়ায় অনেক বৈচিত্র এসেছে।
আমার মনে হয় ছড়ার বৈচিত্র ও ধরণ পাল্টানোর জন্যই এখন ছড়ার প্রতি লেখকদের অমনশীলতার কারণ। ছড়া বলতেই শিশুতোষ লেখা এটি আর শুধুমাত্র শিশুতোষ লেখায় আবদ্ধ নেই।
প্রশ্ন: সাগর ইসলাম: বেশির ভাগ পাঠক এবং লেখকরা মনে করেন ছড়া হচ্ছে শিশুদের পাঠ্যবস্তু এসব ছড়া বোদ্ধা সমাজ কালচারের নয়। এ বিষয়ে আপনার মতামত কি?
উত্তর: অনীক রহমান বুলবুল: যে সমস্ত পাঠক ও লেখক মনে করেন ছড়া শিশুদের পাঠ্যবস্তু , এসব ছড়া বোদ্ধা সমাজ কালচারের নয় তাদের সাথে যথেষ্ট দ্বিমত আছে আমার।ছড়ায় সহজভাবে যে কথাটি বলা যায় সাহিত্যের আর কোনো শাখায় এটি সম্ভব নয়। ঐ যে বললাম ছড়ার আঙ্গিক ও ধরণ পাল্টিয়েছে। আমাদের সমাজে কিছু তথাকথিত বোদ্ধাশ্রেনি যারা নিজেদের মনে করেন তাদের বলবো ছড়া এক বিশাল জগৎ।ঘুরে আসুন এ জগৎ থেকে।
প্রশ্ন: সাগর ইসলাম: ছড়ার পাশাপাশি আপনি আর কি কি বিষয়ে লিখছেন? আপনার বই সংখ্যা কতোটি এবং পরবর্তী ২০২৫ এ বই মেলায় কোন ধরণের বই আমরা পাচ্ছি? আরেকটি বিষয় আপনি যদি বলতেন তা হচ্ছে- এই যে প্রতিবছর এতো এতো কবিতার বই বের হয়, আদৌ কি এতো কবিতার বই বের হবার দরকার আছে, নাকি কবিদের উচিত এতো ঘনঘন বই প্রকাশ না করে ঘনঘন লেখার মান বিবেচনা করা দরকার? ব্যক্তিগত ভাবে আপনি বর্তমান সময়ের কোন কবিদের লেখা বেশি পড়ছেন বা যুক্তিক মনে হয়?
উত্তর: অনীক রহমান বুলবুল: ছড়ার পাশাপাশি আমি কবিতা ও গান লিখে থাকি। মজার বিষয় হচ্ছে কবিতা লেখা দিয়ে শুরু করলেও ছড়ায় হারিয়ে ফেলেছি নিজেকে। যেখানেই অনিয়ম দেখি , অনৈতিক কার্যকলাপ দেখি , নষ্ট রাজনীতি দেখি সেখানেই খোঁচা দিতে ইচ্ছে করে। ইচ্ছে করে আমার লেখার মধ্য দিয়ে প্রতিবাদ জানাতে। বেশ কিছু প্রবন্ধও রয়েছে সমসাময়িক শিক্ষা ব্যবস্থা ও রাজনৈতিক বিষয়ে। এ পর্যন্ত ছড়াগ্রন্থ’ ও কাব্যগ্রন্থ’ মিলিয়ে ১০ টি বই প্রকাশিত হয়েছে । ইচ্ছে রয়েছে অন্তত একটি ছড়াগ্রন্থ’ ও কাব্যগ্রন্থ’ প্রকাশ করার। তবে আরেকটি তীর্যক চার লাইনের ছড়াগ্রন্থ’ প্রকাশের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ছাত্র আন্দোলন থেকে শুরু করে রাজনীতির হালচাল সব থাকবে চার লাইনের এই ছড়াগ্রন্থ।
বাংলা একাডেমির বই মেলাতে যে পরিমান বই প্রকাশিত হয় , এতে মানসম্পন্ন বইয়ের সংখ্যা খুবই কম। কবিদের উচিত ঘনঘন বই প্রকাশ না করে লেখার মান বিবেচনা করে বই প্রকাশ করা দরকার।
এই সময়ে নবীন অনেক লেখক ভালো লিখছেন । তাদের চিন্তা চেতনাও অনেক প্রখর। এই সমস্ত নবীন লেখকরা নিরবেই এই চর্চাটা অব্যাহত রেখেছে। ওরা অনেকেই প্রচার বিমূখ।
প্রশ্ন: সাগর ইসলাম: বিভিন্ন ধরণের সাহিত্য সংগঠন দেশের সকল অঞ্চলেই দেখা যায়। এতো এতো সাহিত্য সংগঠন, আয়োজন থাকার পরও মনে হয় যে পূর্বের সাহিত্যর মতো বর্তমান সাহিত্য এতোটা উজ্জ্বল নয়, এর কারণ কী? আপনার কি মনে হয় এসব সংগঠন তাহলে তাদের ব্যক্তিচাহিদা ও রুচির মধ্যেই আটকে থাকেন বা তাদের চিন্তাগত কোনো সার্থ উদ্ধার করার জন্য এসব করেন? আদতে সাহিত্য সমৃদ্ধির উৎকৃষ্ট প্রš’া কি প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন এসব সাহিত্য সংগঠনচারিরা?
উত্তর: অনীক রহমান বুলবুল: সারাদেশে অসংখ্য সাহিত্য সংগঠন আমরা দেখি। অনেকটা ভূঁইফোড়ের মতো। আমিও একমত এতো এতো সাহিত্য সংগঠন থাকার পরেও পূর্বের সাহিত্যের মতো এতো উজ্জ্বল নয় ঐ সমস্ত সাহিত্য সংগঠনের । এখন দুটো কবিতা লিখেই সবাই কবি হতে চায়। সম্মাননা চায়।আর ঐ সংগঠনগুলো অর্থের বিনিময়ে ক্রেস্ট বা মেডেল বিক্রি করেও দু'পয়সা কামাতে চায়। এখানে সাহিত্যের সাথে ব্যবসা জড়িয়ে গেছে যা কাম্য নয়। তবুও আমি পুরোটাই বিপক্ষে নই। লিখুক। সময়ে আলো আসবেই। একসময় আর্রজনা দূর হয়ে সত্যিকারের কবি এবং লেখকরা আলো ছড়াবেন। তারপরও মনে হয় এই সংগঠনগুলো তাদের ব্যক্তি চাহিদা রুচির মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
লেখকদের প্রচারের চাইতে ভালো লেখার প্রতি মনোযোগী হলে এ সমস্যা কিছুটা দূর হবে বলে আমার মনে হয়। আর ঐ সব কবিকেই বা এককভাবে দোষ দেই করে? রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় রাজনৈতিক তৈলবাজিতে বড় বড় পুরস্কারও পেয়ে থাকেন অনেকেই এবং তার জন্য তদবীর চলতে থাকে হামেশাই।
আমাদের এখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে।তবেই কবি ও কবিতার মুক্তি মিলবে।
প্রশ্ন: সাগর ইসলাম: টাঙ্গাইল বা দেশের বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন সাহিত্য সংগঠনের নানা আয়োজনে আপনাকে দেখা যায়, এসব আয়োজন আপনাকে কতোটা মুগ্ধ করে এবং মুগ্ধ করার কারন কি? এছাড়া টাঙ্গাইলে যারা লেখালেখির সাথে আছেন তাদের বর্তমান কয়েকজনের নাম যদি উল্লেখ করতেন যারা প্রচন্ড সম্ভাবনাময়ী বাংলা সাহিত্যে অবদান রাখবে।
উত্তর: অনীক রহমান বুলবুল: টাঙ্গাইল তথা দেশের বিভিন্ন জেলার সাহিত্য আয়োজনে আমি ডাক পাই । এরমধ্যে একধরণের আনন্দ আছে। আমি একজন সাধারণ মানুষ এবং টুকটাক লিখি । আমার মতো অতি সাধারণ একজনকে প্রায় অনুষ্ঠানেই আমন্রণ জানানোর মধ্যে একধরনের পুলক অনুভব করি। কিন্তু যাওয়ার পর সেই পুলক অনেকটাই পানসে হয়ে আসে। প্রায়ই ঐ মানহীন কবিতা পাঠ এবং ক্রেস্ট বিতরণ চলে। কখনো কখনো বিশেষ বিশেষ সম্মাননাও দেয়া হয় ঘটা করে।হতাশ হই।আমার ভালোলাগার একটা কারণ হলো ঐ এলাকার কবি সাহিত্যিক তথা কিছু নতুন মানুষের সাথে পরিচয় হয়।বন্ধুত্ব হয়। কারণ কবিরাই পারে সম্প্রীতির এক অটুট বন্ধন তৈরীর করতে।
টাঙ্গাইলে এই সময় অনেকেই ভালো লিখছেন। অনেকেই টাঙ্গাইলে জন্ম হলেও তাঁরা লেখক বা কবি হিসেবে জাতীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত। এই সময়ে যারা টাঙ্গাইলে থাকছেন এবং লিখছেন তাদের মধ্যে অন্যতম কবি মাহমুদ কামাল,শফিক ইমতিয়াজ,শরীফ শাহরিয়ার, কুশল ভৌমিক, রুদ্র মোস্তফা, জারিফ আলম,আরমান আজম, কাশীনাথ মজুমদার পিংকু, শ্রেষ্ঠা , সাগর ইসলাম প্রমুখ। এরমধ্যে সাগর ইসলাম , জারিফ আলম, শ্রেষ্ঠাকে অনেক বেশি সম্ভাবনাময় বলে মনে হয়। এবং এরাই বাংলা সাহিত্যে অবদান রাখবে বলে আমার মনে হয়।
প্রশ্ন: সাগর ইসলাম: একটি অনুষ্ঠানে ব্যক্তি আলোচনা/সমালোচনার চাইতে অধিক গুরুত্বপূর্ন তার সৃষ্টি আলোচনা/ সমালোচনা- এ বিষয়ে আপনার মতামত যদি জানাতেন!
উত্তর: অনীক রহমান বুলবুল: ঐ যে আগেই বলেছি সাহিত্য অনুষ্ঠানের নামে মেডেল ,সার্টিফিকেট বিতরণ হচ্ছে দেদারসে। আবার কাউকে বিশেষ সম্মাননাও প্রদান করা হয়। এখানেও বানিজ্যের একটি ব্যাপার তো রয়েইছে। অথচ আলোচনা হওয়ার কথা তার সাহিত্য , সৃষ্টিকর্ম নিয়ে বিশ্লেষণ। এটি একেবারেই কম দেখি আমরা। আরেকটি ব্যাপার এখনকার লেখকরা কোনো সমালোচনাই নিতে পারেন না। শুধু প্রশংসাই চায়।এর ফলে সাহিত্যের যে সত্যিকারের বিকাশ সেটি কিন্তু দারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
আমার মতে যে কোন লেখা নিয়ে আলোচনা হবে সমালোচনা হবে । কখনোই ব্যক্তি প্রশংসা না করে সাহিত্যের গুণগত উৎকর্ষতার দিকেই সবাইকে নজর দেয়া উচিত।
প্রশ্ন: সাগর ইসলাম: সাহিত্য সমৃদ্ধির জন্য একজন লেখককে আর কোন কোন বিষয়ে অতি জরুরী পদক্ষেপ নেয়া দরকার বলে আপনার মনে হয়?
উত্তর: অনীক রহমান বুলবুল: একজন লেখককে মনে রাখতে হবে তিনি মানুষ। মানবিক মূল্যবোধ সমৃদ্ধ একজন মানুষ তিনি সবার আগে।এরপর তিনি সমাজের,রাষ্ট্রের এবং বিশ্বজনীন চেতনায় তাকে সমৃদ্ধ হতে হবে। সব শেষে তিনি একান্ত নিজের। আমি মনে করি প্রত্যেকটি লেখায় একটি ম্যাসেজ থাকবে সামাজিক মূল্যবোধের আলোকে।তাকে জোর দিতে হবে চিন্তা ও চেতনার উৎকৃষ্টতার দিকে।
ধন্যবাদ।