কবি রফিক আজাদের “ভাত দে, নইলে মানচিত্র চিবিয়ে খাবো”: মারুফ আদনান


কবি রফিক আজাদের “ভাত দে, নইলে মানচিত্র চিবিয়ে খাবো”: মারুফ আদনান




"ভাত দে, নইলে মানচিত্র চিবিয়ে খাবো"—রফিক আজাদের এই বিখ্যাত পঙক্তিটি ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষপীড়িত বাংলাদেশের এক নির্মম বাস্তবতাকে প্রতিফলিত করে। এটি আমাদের বেঁচে থাকার জন্য খাদ্যের মৌলিক চাহিদার গভীরতা বোঝায়। প্রতিদিনের জীবিকা নির্বাহ ও খাদ্য যোগানের জন্যই আমরা কাজ করি, এবং প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে ভবিষ্যতের কর্মসংস্থানের পথ প্রস্তুত করি। কিন্তু দীর্ঘ ২৩-২৪ বছর অধ্যবসায়ের পর অর্জিত অনার্স বা মাস্টার্স ডিগ্রির ফলস্বরূপ সবাই কি কাঙ্ক্ষিত চাকরি বা কর্মসংস্থান পায়?সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের মাধ্যমে সাম্যের আদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে আমরা কি বিচ্ছিন্নভাবে উৎপাদনে আত্মনিয়োগ করব, নাকি পিতৃপুরুষের সঞ্চিত সম্পদ বিক্রি করে দিনযাপন করব? উদাহরণস্বরূপ, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো নিজেদের প্রাকৃতিক সম্পদ বেচে জীবিকা নির্বাহ করছে, অথচ পশ্চিমারা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য তাদের সম্পদ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণ করছে।বর্তমান বিশ্ব একটি পারস্পরিক নির্ভরশীল ব্যবস্থায় আবদ্ধ। এক দেশের অর্থনীতি অন্য দেশের উপর প্রভাব ফেলে। রাজনৈতিক কাঠামো প্রত্যক্ষভাবে একটি দেশের অর্থনীতি ও সমাজকে প্রভাবিত করে। এর পাশাপাশি, সামাজিক বৈষম্য অনেক মানুষের জীবনযাত্রার মান নিম্নস্তরে নামিয়ে আনে, এবং পরিবেশগত অবক্ষয় সমগ্র মানবজাতির জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এসব সমস্যার সমাধানে সম্মিলিত প্রচেষ্টা অপরিহার্য। শিক্ষা, কর্মসংস্থান, সমাজতন্ত্র, ব্যক্তিস্বাধীনতা, উৎপাদন এবং উন্নয়ন—এই সমস্ত বিষয় পরস্পরের সাথে গভীরভাবে সম্পর্কিত। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত একটি সুষম সমাজ গঠন করা, যেখানে সকলের জন্য সমান সুযোগ থাকবে এবং মানবিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল একটি ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post