প্রসঙ্গ ‘বিজিতের বাইবেল’ এবং আদিত্য আনামের কবিতা: দ্বিতীয় কিস্তি
বিজিত মানেই তো ব্যর্থ বা পরাজিত আর বাইবেল তো খৃষ্টানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ। 'বিজিতের বাইবেল' তাহলে আর কী? মোদ্দা কথা হলো ব্যর্থ বা পরাজিতদের বেদনাগুলিকেই মহামান্বিত করে বোধের অভিধানে টেনে এনেছেন কবি আদিত্য আনাম তার প্রকাশিতব্য কবিতার বই 'বিজিতের বাইবেল'-এ। তার পাণ্ডুলিপিজুড়ে হৃদয় থেকে হৃদয়ের জীবিত বৃক্ষপাতারা তরুণ রমণীর করুণ কপাল-সিঁদুর লালে ভরাট। এ রক্তজবা শব্দের আঘাত এতটাই সহকারী পরস্পর পরস্পরের সাথে— কোথাও কোনো স্পেস নেই কিন্তু আছে কোটি কোটি আনন্দচ্যুত বিস্ময়!
লাশের খাটিয়া হেঁটে যাওয়ার মতোন হেঁটে গেছে বাক্য থেকে বাক্য, কবিতা থেকে কবিতা; হেঁটে যেতে যেতে এসব কবিতা মাটির কালো অন্ধকার কবরে নয়, বরং মানুষের রক্তিম অন্ধকার অন্তরে দাফন হয়ে যায়।
পুরাতন সকল দুঃখ নতুন শব্দ টেনে আনার প্রতীভা যেসব কবির থাকে সেসব প্রতীভা এ-সমাজ এড়িয়ে চললেও স্বয়ং সাহিত্য তা পারে না। সাহিত্যের সংবিধানে এমন বয়কট নীতি নেই।
বিজিতের বাইবেল পৃথিবীর আকাশে কোনো পাখি দেখে না, শুধু উড়তে দেখে মানুষের দুঃখ, বিষাদ, আরোপিত জটিলতা, বোমারু বিমান, গ্যাঞ্জাম, সংকট আর কপাল-জানজটের ঘনোমেঘ। এসব মেঘ বৃষ্টি হয়ে সমুদ্র পায় না, পায় মানব হৃদয়ের মহাসমুদ্রও। একেকটা ব্যর্থতার ফোঁটা তোলে তার পাহাড় সমান আওয়াজ!
এত ভাঙনের আওয়াজ মানুষ কি হৃদয়ে টাইপ করে রেখেছে আদি থেকে অনন্ত অব্দি ?
হয়তো তাই, নয়তো নিরবতার এত প্রশ্রয় থাকে কেন মুদ্রাপূজার ঘরে ঘরে?
ব্যর্থতা কেন প্রেমিকার আঙুল ছুটে যাওয়া দৃশ্যের মতোন অথব্য-সুন্দরী হয়ে ওঠে!
0 Comments