মুক্তগদ্য: সাগর ইসলাম
আমরা সে পরিবার বিলং করি না যে পরিবার বলবে- তোর লেখা ঠিকঠাক মতো চলছে তো, কোনো সমস্যা হচ্ছে না? আমরা সে বন্ধু সার্কেল বিলং করি না যারা বলবে -তোর লেখালেখি চলছে কেমন, সমস্যা হলে বল কি করলে ভালো হবে তোর জন্য৷ আমরা সেসকল প্রেমিক প্রেমিকা বিলং করি না যারা নিজস্ব অভাব চাহিদা ব্যতিরেকে বলবে-তোমার লেখালেখিতে আরো যত্ন দরকার, আমি কীভাবে মেন্টাল সাপোর্ট বা অন্য কোনো সাপোর্ট,সময় দিতে পারি বলো।' এরকম সব সেক্টর-ই। রক্ত থেকে সম্পর্ক, সম্পর্ক থেকে যন্ত্র, যন্ত্র থেকে মুদ্রা সমাজ কেউ কখনো বলবে না- তোর লেখালেখি কেমন চলছে, কোন পরিবেশটা তোর লেখার জন্য জরুরী যেটার সমস্যায় তোর মনোনিবেশ করা একদমই হচ্ছে না।' আর রাষ্ট্র, ধর্ম, সরকার এরা তো বর্তমানে বেঁচেই যায় কোনো অসাম্প্রদায়িক লেখক কবি বুদ্ধিজীবীতার উন্নতর প্রভাব বিস্তার না থাকলে৷ এরা শুধু ক্রাইসিস বুঝে নিজের। মূলত নিজেরও নয়, এরা ক্রাইসিস বুঝে টাকার, খাবার, ধর্ম ব্যবসার আসবাবপত্রের, ইট,রড, সিমেন্ট, গাড়ি, বাড়ি, ফ্ল্যাট, গহনা, সম্পদ, ক্ষমতা দুর্নীতি আর কালোবাজারির। যার কোনোটিই প্রকৃত মানুষ পৃথিবীর এক ছটাক অংশও নয়। হ্যাঁ বাঁচতে হলে এসবেরও দরকার আছে। বাঁচার পৃথিবীতে কোনোকিছুই ফেলনা নয়। তবে একজন রিক্সা ওয়ালার দায়িত্ব যেমন শিক্ষকতা করা নয়, একজন ডাক্তারের দায়িত্ব যেমন কন্সট্রাকশনের ফ্লোচার্ট তৈরী করা নয় তেমনি একজন লেখক/কবির দায়িত্ব নয় টাকা কামানো, সন্তান উৎপাদন করা আর যা চলে গেছে নষ্টদের দখলে তা মেনে নিয়ে জীবনযাপন করা। নাপিতের কাজ যে চুল কাটা, তাকে দিয়ে জোর করে প্রসূতি মায়ের সিজার করানোটা যে শুধু অন্যায় নয় কয়েকটি জীবন রান্নাঘরে তাজা মাছের গলা কাটার মতো নির্মম হত্যা, তা এরা কখনোই বুঝার চেষ্টামাত্র করেনি, করেনা। এসকল সেক্টরের এরকম ভয়ঙ্কর মানবিক নির্যাতন, চাপাদণ্ডের শিকার হয়েই একসময় একজন লেখক, কবিকে বেছে নিতে হয় সন্ন্যাস জীবন। ভালোবাসা, মায়া, সম্পর্ক সব ফেলেফুলে কাটাতে হয় এক ভয়াবহ বিদর্ভ জীবন। এভাবেই যায় অবেলাসূচক বেলা। বিকট এক আফসোস বেজে উঠে মগজে।বলি:' তোমরা যেখানে বিষের বাজার দেখো, আমরা সেখানে দুধের স্বর উত্রাতে দেখি, এটাই কি আমাদের অপরাধ?'