জাহিদ হাসানের কবিতা
অমোঘ বকুল
এখনও মনে পড়ে তোমায় ; জীবনের সমস্তটায়
একটি অমোঘ বকুল- বন্দি করে ফেলেছি
স্পর্শের বাহিরে
ক্ষমা করে দিয়ো, ক্ষমা এক আশ্চর্য ফুল
যার সুবাস অনন্ত অসীমের মতো সীমাহীন,
আমাকে ছিন্নভিন্ন করে আচমকা
আমার শব্দহীন চিৎকার! পৌঁছে না তোমার কানে
তুমি কি নিয়েছো স্বেচ্ছা নির্বাসন
নিঃসঙ্গতা ছুঁয়েছে কি তোমায়?
অমোঘ বকুল!
চারদিকে কেউই নেই, আছে শুধু মৃত্যু মিছিলের
সুরেলা তেলাওয়াত
তুমি কি শুনতে পাও!
যদি শুনতেই পাও
তাহলে কেন পাও না টের? নাকি
সন্ধ্যেরাতেই ঘুম তোমার চোখ জুড়ে
অমোঘ বকুল!
তোমার অজান্তে তোমাকে আমি অনুবাদ করি তোমাতে বিলীন হয়ে...!
অতল
আমার হৃদয়ের দাম
একটা ভাঙা আয়নার বিক্রয় মূল্যের সমান
একদা আয়নায়
চোখ রাখতে দেখিু
আয়নায় আমি নেই
আছ তুমি!
আমার অস্তিত্ব তোমাতেই বিলীন
কে আর আমি?
আমি কি আমার স্বপ্নদৃশ্য
আমি কি শুধুই
বেঁচে থাকার জন্য,
আকণ্ঠ সুধাপান করে যাচ্ছি
পৃথিবীতে সব গল্প বর্ণময় নয়
তাই হয়তো
বিরহী কাক ডেকে যায়
নাগরিক ভোরে
সকল ভোরু ক্ষমা করো আমাকে
মনের ভেতর আমার চিরকালের নির্বাসন
যা কিছু ভালো, যা কিছু সুন্দর
তার সবটুকুই উৎসর্গ
অসুখ ও নিঃসঙ্গতার কাছে....
বিরহ সন্ধ্যা
নিবিড় নীল সন্ধ্যায়
সব কেমন যেন মেঘ হয়ে ভেসে যায়
প্রিয় কিছু আদিম শব্দ
কিছু অপূর্ণতা বেশি অর্থবহ হয়ে ওঠে
এমন অসুখে! কোথায় হারায়
যেখানে যায় সেখানেই বিরহ আমার ছায়া হয়-
এই তো জীবন
যেন অন্ধের জিজ্ঞাসা , হায়!
দাঁড়াবো কোথায় মনে পড়ে অচেনাকে
এতো বড়ো পৃথিবী!
অথচ বিরহ ছাড়া আর কোনো শত্রু খুঁজে পেলাম না,
আমার থাকা না থাকায়
এখনো অনুবাদ করছি বিরহকেই
তোমার মতোই- অভিকর্ষের চেনা অমোঘ নিয়মে
তবু জীবন সত্য
যা পেয়েছি এবং যা পায়নি
দুইয়ের মাঝে...