Header Ads Widget

Responsive Advertisement

(বিজিতের বাইবেল) পাণ্ডুলিপির কবিতা: আদিত্য আনাম

 বিজিতের বাইবেল ।। দহনপর্ব: ক্ষয়িষ্ণু পাতার মর্মরধ্বনি ।। আদিত্য আনাম




০১


খোদা, জীবন কি একটাই? 

দেখেন তো আরো দু-একটা আছে কিনা!

আমাকে যেটা দিছেন সেটা তো নষ্ট!


অপেক্ষার হাত ধরে বসে আছি

আমার পূর্ব-পুরুষেরাও বসে থাকত এভাবেই;

আমাদের প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম কেটে যাচ্ছে

কিন্তু অপেক্ষার বয়স বাড়ছে না কিছুতেই

তবে কি আমাদের অপেক্ষা-ই আমাদের আয়ুখোর?


 

০২


বাবা নুন আনতে গিয়ে সমুদ্রে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পর

মা পান্তার পাতিলে ডুব দিয়ে সাঁতার কেটে 

ভাতের সাথে নিজেকে তুলে এনে 

আমাদের পাতে বেরে দিতেন।

আর আমরা এতটাই ক্ষুধার্ত ছিলাম যে

অনায়াসে ভাতের সাথে খেয়ে ফেলতাম মাকে।


তবে কি আমরা-ই সেই গাছখেকো ফল? 

যাদের নিয়তিজুড়ে অভিশাপের সাপে কামড়ানো ক্ষত 

আর দু-চোখে বিষাক্ত জল!

 


০৩

দু-চোখে ঘুম নেই; শূন্যতা ঘুরছে প্রহরীর মতো। 

পাঁজরে প্রজাপতি খুন হয়ে পড়ে আছে। 

মন থেকে মস্তিষ্ক পর্যন্ত পতনের রানওয়ে 

শোক ও শাপ নরকের পাসপোর্ট হাতে নিয়ে  

নেমে আসে আমার উদ্দেশ্যে...

অথচ আমি কোথাও যেতে পারি না; কারণ 

পৃথিবী শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছে আমার পা।



০৪


ট্রয় নগরীর মতো একটি বিধ্বস্ত হৃদয় নিয়ে 

আমি হেঁটে চলি মানুষের বনের ভিতর দিয়ে।

আমার চোখের ও শোকের দরজা খুলে 

দলে দলে উড়ে যায় বিপন্ন ফড়িং। 

পৃথিবী নামক কসাইখানায় আমি এক সিসিফাসের সন্তান 

যে জীবনভর প্রকাণ্ড এক পরাজিত পাথর 

টেনে তুলছে নিয়তির চূড়ান্ত চূড়ায় 

আর তা পুনরায় গড়িয়ে পড়ছে পতনের পাদদেশে। 

আমার বেদনাগুলো এক একটা উহুদপাহাড়

অথচ আমি এতোটাই ক্ষুদ্র যে একটি চড়ুইছানা 

আমাকে ঠোঁটে নিয়ে অনায়াসে উড়ে যেতে পারবে।


 


Post a Comment

0 Comments